নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ায় ‘অস্ত্র সরবরাহকারীসহ’ তিনজনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট-সিটিটিসি।
তাদের মধ্যে মো. কবীর আহাম্মদ (৫০) নামের একজনকে রোববার রাতে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে এবং মো. ইয়াসিন (৪০) ও আব্দুর রহমান ইমরান (২৬) নামের দুজনকে রাজধানীর কদমতলী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ অভিযানে তাদের কাছ থেকে তিনটি দেশীয় পিস্তল, ছয়টি একনলা বন্দুক, ১১ রাউন্ড গুলি, ১৪০ রাউন্ড সিসার তৈরি গুলি, ২ লিটার অ্যাসিড, গান পাউডার, ৩ লিটার অকটেন, ২ কার্টুন ম্যাচ বক্স, ১ কয়েল বৈদ্যুতিক তার, ২ বোতল দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ, ২ টি স্প্রে ক্যান, একটি লোহার করাত, টেপ ও সুপার গ্লু, প্রশিক্ষণের পোশাক ও টুপি এবং হাত করাত ও ব্লেড উদ্ধারের কথা জানিয়েছেন সিটিটির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।
সোমবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্রগ্রামের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে গত ২১ ডিসেম্বর এ জঙ্গি সংগঠনের সদস্য সাইফুল ইসলাম তুহিন ও মো. নাঈম হোসেনকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসির একটি দল।
“তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই সংগঠনে অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে কবির আহাম্মদকে শনাক্ত করা হয়। পরে তাকে বান্দরবান জেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেখানে তার বিরুদ্ধে বান্দরবানে একটি অস্ত্র মামলা রয়েছে।”
আসাদুজ্জামান বলেন, কবীরকে জিজ্ঞাবাদ করে নাইক্ষ্যাংছড়ি থানার বাইশারী এলাকার দূর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে মাটির নিচে লুকানো অবস্থায় দুটি প্লাস্টিকের ড্রাম থেকে অস্ত্র ও গোলাবারূদ উদ্ধার করা হয়।
“প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কবীর জানায়, সে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করেছিল এবং উদ্ধার অস্ত্রের কিছু অংশও ওই গোষ্ঠীকে সরবরাহ করার পরিকল্পনায় ছিল।”
সিটিটিসি প্রধান বলেন, “জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার মাস্টার মাইন্ড পলাতক শামিন মাহফুজ দুর্গম পার্বত্য এলাকায় সশস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য বিভিন্ন ধাপে অস্ত্র সংগ্রহ করতে কবীরের সাথে যোগাযোগ করে। কবীরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ইয়াসিন ও ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা ওই নতুন জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য এবং পলাতক শামিন মাহফুজের ঘনিষ্ট সহযোগী।”
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ইমরানের মাধ্যমে শামিন মাহফুজ বিভিন্ন সময়ে তার ‘সাংগঠনিক আর্থিক লেনদেন’ করাতেন। আর ইয়াসিন সংগঠনের ‘শেল্টার হাউজ এবং নতুন সদস্যদের আবাসনের ব্যবস্থাপনার’ দায়িত্বে ছিলেন।
গ্রেপ্তার তিনজনের বিরুদ্ধে ডেমরা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা হয়েছে বলে জানান আসাদুজ্জামান।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “কবীর টাকার বিনিময়ে অস্ত্র সরবরাহ করলেও এখন নতুন জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। কবীরও রেডিকালাইজড হয়ে গেছে।”