ধলপুরের সিটি পল্লী উচ্ছেদের উদ্যোগের প্রতিবাদ

স্থানীয় কাউন্সিলর বলছেন, ওই জায়গায় পুনর্বাসনের জন্য ভবন নির্মাণ এবং পরিবহন পুলের জন্য গ্যারেজ নির্মাণ করা হবে।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ধলপুরে সিটি পল্লী উচ্ছেদের উদ্যোগের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে বিক্ষোভ দেখানো হয় বলে বিকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রায় ১৬ একর জায়গায় গড়ে উঠা সিটি পল্লী মেথর পট্টি হিসাবে পরিচিত। ওই জায়গায় পুনর্বাসনের জন্য ভবন নির্মাণ এবং পরিবহন পুলের জন্য গ্যারেজ নির্মাণ করা হবে বলে সিটির ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল কালাম জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সেখানে থাকা তেলেগু সম্প্রদায়ের সবাইকে পুনর্বাসন করার পক্রিয়া চলমান এবং এ ব্যাপারে মেয়র ফজলে নূর তাপস প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।”

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ব্রিটিশ আমল থেকে তেলেগু সম্প্রদায়ের মানুষ সেখানে বসবাস করে আসছে। এটি তখন থেকে মেথর পট্টি হিসাবে পরিচিত পায়। প্রথমে তারা মেথর থাকলেও এখন কালের পরিক্রমায় তাদের ‘পরিচ্ছন্নতা কর্মী’ বলা হয়। পূর্ণবাসন ছাড়া তাদের বিনা নোটিসে চলে যেতে বলা বা উচ্ছেদ করা বেআইনি, অগণতান্ত্রিক।”

উচ্ছেদের প্রতিবাদে আয়েজিত মানববন্ধনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে ঐক্য পরিষদের সভাপতি কাজল দেবনাথ এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানাদাশ গুপ্তের নামে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস তেলেগু সম্প্রদায়ের সকলকে মৌখিকভাবে চলে যেতে বলেছেন এবং যাত্রাবাড়ী থানার ওসি কোনো প্রতিবাদ না করে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দিয়েছেন। এ কারণে প্রায় ১২-১৩ শত বাসিন্দা হুমকির মধ্যে রযেছে।”

মানববন্ধন কর্মসূচিতে ঠাকুরগাঁওয়ে মন্দির ভাংচুরের প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানানো হয়।

ঐক্য পরিষদের অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করলে যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মফিজুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জায়গাটি সিটি করপোরেশনের। সেখানে গড়ে উঠা বস্তি ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করা হবে, এজন্য আইনি সহায়তা চেয়ে সিটি করপোরেশন তাদের চিঠি দিয়েছে।”

হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, “উচ্ছেদকালে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন অবনতি না হয়, সেজন্য সিটি পল্লীর নেতা পর্যায়ের কয়েকজনকে ডেকে সহযোগিতা চেয়েছি।”

৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল কালাম জানান, প্রায় ১৬ একর জমির মধ্যে ৬ একর জায়গায় ঘর বানিয়ে পুনর্বাসন করা হবে। সেখানে তেলেগু সম্প্রদায়ের লোকজনও থাকবেন। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি পরিবারকে আশপাশে ঘর দেওয়া হয়েছে। বাকিদের অস্থায়ীভাবে ঘর দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

“বাকি ১০ একর জায়গায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কপোরেশনের পরিবহন পুলের গাড়ির গ্যারেজ বানানো হবে।”

কাউন্সিলর বলেন, “এলাকাটি উচ্ছেদ করা হবে বলে প্রায় তিনমাস ধরে জানানো হচ্ছে। তেলেগু সম্প্রদায়ের সবার সাথে মেয়র মহোদয় কথা বলেছেন, অনেককে পাশে অস্থায়ী ঘরের চাবি দিয়েছেন। যাদের চাকরি নেই, তাদের চাকরি দেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন।”