চৌধুরীপাড়ার ‘জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে’ খতনা করানোর পর জ্ঞান ফিরে এলেও বমি করতে করতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে আহনাফ।
Published : 03 Jun 2024, 09:28 PM
খতনা করাতে গিয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র আহনাফ তাহমিন আয়হামের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চ সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেয়।
রিটকারী পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম মেহেদী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।
অ্যাডভোকেট মেহেদী পরে সাংবাদিকদের বলেন, “বিষয়টি তদন্ত করে আগামী তিন মাসের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (ডিজি) প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছে আদালত।”
তিনি বলেন, লাইসেন্সবিহীন অবৈধ জে এস হাসপাতাল কেন বন্ধ করা হবে না, যেসব চিকিৎসক এ ঘটনায় জড়িত তাদের লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না এবং আহনাফের পরিবারকে কেন ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
১০ বছর বযসী আহনাফ তাহমিন আয়হাম মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। তার বাবা ব্যবসায়ী ফখরুল আলম, খিলগাঁওয়ে তাদের বাসা।
সন্তানের মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ এনে হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন ফখরুল। পরে ওই হাসপাতাল বন্ধ করে দিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, চৌধুরীপাড়ার ‘জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে’ ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে শিশুটিকে খতনা করাতে নিয়ে যায় তার পরিবার। খতনা করানোর পর জ্ঞান ফিরে এলেও আহনাফ বমি করতে করতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
খতনা করাতে গিয়ে ঝরল আরেক শিশুর প্রাণ, ২ চিকিৎসক গ্রেপ্তার
এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর সাঁতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনার জন্য অজ্ঞান করা হয়েছিল শিশু আয়ান আহমেদকে। খতনা করানোর পর ১১ ঘণ্টায়ও তার সংজ্ঞা না ফিরলে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে এনে লাইফসাপোর্টে রাখা হয়। সাত দিন সেখানে থাকার পর গত ৭ জানুয়ারি আয়ানকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
আয়ানের চাচার অভিযোগ ছিল, আংশিক অচেতন করে খতনা করানোর কথা থাকলেও চিকিৎসকরা আয়ানকে পুরোপুরি অজ্ঞান করা করেছিল।
ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া মৃত্যুসনদে আয়ানের মৃত্যুর কারণ হিসেবে কার্ডিও-রেসপিরেটরি ফেইলিওর, মাল্টিঅর্গান ফেইলিওর এবং কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কথা লেখা হয়।
শিশু আয়ানের এমন মৃত্যুর ঘটনায় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট করে ৯ জানুয়ারি রিট করেন এক আইনজীবী। জনস্বার্থে করা সেই রিট আবেদনে শিশু আয়ান আহমেদের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের সনদ বাতিল এবং ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়।