“আমরা সিপিজেকে বাংলাদেশে এসে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার অবস্থা দেখার আহ্বান করছি। আমরা মনে করি স্বাধীনতার ৫৩ বছরে সর্বোচ্চ স্বাধীনতা ভোগ করছে গণমাধ্যম।”
Published : 18 Feb 2025, 09:13 PM
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো অন্তর্বর্তী সরকারের ‘অন্যতম লক্ষ্য’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “কিছু দিন আগে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের যে প্রতিবেদন হয়েছে, তাতে স্পষ্ট যে কী ধরনের অপরাধ তিনি (শেখ হাসিনা) করেছেন।
“তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযুক্ত করা হয়েছে। এটা বড় ধরনের অপরাধ। জাতিসংঘ ও কিছু মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদনের পর অনেক চাপ তৈরি হয়েছে।”
প্রেস সচিব বলেন, “এই চাপের একটা নমুনা দেখেছেন যে ইন্ডিয়া টুডে একটা জরিপ করেছে। সেখানে দেখা গেছে ৫৫ শতাংশ মানুষ চায় শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হোক। কিছু শতাংশ চাচ্ছে তাকে অন্যদেশে দিতে।
“মাত্র ১৬ থেকে ১৭ শতাংশ মানুষ চায় শেখ হাসিনাকে ভারতে রাখতে। শেখ হাসিনাকে ফেরত এনে সশরীরে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো সরকারের প্রধান লক্ষ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম।''
আওয়ামী লীগের আগামী নির্বাচনের অংশগ্রহণ নিয়ে সরকারের চিন্তাভাবনা জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, ''আমরা বারবার বলেছি, এই বিষয়ে দেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আমাদের একটাই কথা- আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকর্মী ও সমর্থক জুলাই গণহত্যায় জড়িত, তার আগে গুম-খুনে জড়িত, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, তাদের সবার বিচার হবে।
“এটা হওয়ার পর দেশের মানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত নেবে আওয়ামী লীগের বিষয়ে তারা কী ভাবছেন বা তাদের ভবিষ্যৎ কী হবে।”
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ওয়ার্ল্ড গভার্নমেন্ট সামিটে প্রধান উপদেষ্টার অংশগ্রহণের প্রসঙ্গ টেনে শফিকুল আলম বলেন, ''দুবাই বাংলাদেশি শ্রমিকরা নিষেধাজ্ঞায় রয়েছে। এ নিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস সেখানকার ৫-৬ জন মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন।
“আমরা আশা করছি, এই নিষেধাজ্ঞা দ্রুত উঠে যাবে। সেখানে আবারও বাংলাদেশি শ্রমিক যেতে পারবে। এ নিয়ে সরকারের কাজ চলমানও রয়েছে।''
সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস’ (সিপিজে) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশে এখনো বহু সংবাদকর্মী হুমকি-হামলার শিকার হচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, ''সাংবাদিকতার যেকোনো প্রতিবেদনকে আমরা সাধুবাদ জানাই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে দুই-একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নিয়ে অনেক ধরনের মন্তব্য করা হয়।
“আমরা সিপিজেকে বাংলাদেশে এসে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার অবস্থা দেখার আহ্বান করছি। আমরা মনে করি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ স্বাধীনতা ভোগ করছে গণমাধ্যম। আমরা কোনো পত্রিকাকে সংবাদ উঠানোর জন্য হুমকি দেইনি।''
তিনি বলেন, ''কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনায় সাংবাদিকরা হামলার শিকার হয়েছেন, সেটা আমরা পুলিশকে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছি। কিছু ক্ষেত্রে দেখেছি সাংবাদিকরা অভিযোগ দিতে চান না।”
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদারও উপস্থিত ছিলেন।