সহকারী পুলিশ কমিশনার রাজন কুমার সাহা বলেন, “কোটা আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে। এখন যারা মাঠে নামার চেষ্টা করছে, তারা দুষ্কৃতকারী।”
Published : 29 Jul 2024, 03:35 PM
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে হতাহতের প্রতিবাদে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ঢাকায় অন্তত ছয় জায়গায় জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেছে আন্দোলনকারীরা।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর ইসিবি চত্বর, সায়েন্সল্যাব ও ধানমন্ডি ১ নম্বর রোড, ধানমণ্ডি ২ নম্বর রোড, নিউ মার্কেটের সামনে ও বাড্ডায় স্বল্প সময়ের জন্য বিক্ষোভকারীদের অবস্থান নিতে দেখা যায়।
এসময় এসব এলাকায় কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হলে সড়কে যানজট হয়। পরে পুলিশ মিরপুর রোডের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে গাড়ি ঘুরিয়ে দেয়।
বাড্ডা এলাকায় দায়িত্বরত সহকারী পুলিশ কমিশনার রাজন কুমার সাহা বলেন, “কোটা আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে। এখন যারা মাঠে নামার চেষ্টা করছে, তারা দুষ্কৃতকারী।
“আমরা জনগণের ও তাদের জানমালের নিরাপত্তার জন্য যা কিছু করার, আমরা সেভাবেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের মূল দাবি পূরণ হওয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম রোববার রাতে সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
আরও পাঁচ সমন্বয়কের উপস্থিতিতে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ ঘোষণা দেন। এ ঘোষণা আসার আগে থেকে এই ছয় সমন্বয়ক ঢাকায় ডিবি কার্যালয়ে রয়েছেন। নিরাপত্তাজনিত কারণেই তারা সেখানে থাকছেন বলে পুলিশের তরফ থেকে বলা হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে নাহিদ বলেন, ”আমাদের প্রধান দাবি ছিল কোটার যৌক্তিক সংস্কার, যা সরকার ইতোমধ্যে পূরণ করেছে। এখন শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানাই।
"সার্বিক স্বার্থে এই মুহূর্ত থেকে আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি।"
কিন্তু কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করে পরে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরও তিন সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ, মাহিন সরকার ও সহ-সমন্বয়ক রিফাত রশীদ।
ফেইসবুকে তিনজনের একটি ছবি শেয়ার করে এক পোস্টে রিফাত রশীদ লেখেন, “সিনিয়ররা আগেই নির্দেশনা দিয়েছিলেন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল, সমন্বয়কদের মাঝে এক গ্রুপকে তুলে নিয়ে গেলে বাকিরা নেতৃত্ব দেবে। কাউকে যদি আটক করে জোরপূর্বক কোনো বিবৃতি আদায় করা হয় তবে আমরা সেটা না মেনে যারা মাঠে থাকব, তারা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
ওই পোস্টে তিনি লেখেন, “জোরপূর্বক আদায় করা বিবৃতি বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ প্রত্যাখ্যান করছে।"
রাত ১১টা ৫০ মিনিটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আব্দুল কাদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ছয় সমন্বয়কদের প্রত্যাহারের ঘোষণা প্রত্যাহার করে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
সোমবার সারাদেশে ছাত্র-জনতা অংশগ্রহণে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করার ঘোষণা দেন তিনি। এর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে রাজধানীর বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এ নিয়ে সোমবার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সতর্ক অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। রাজধানীর উত্তরায় সড়কে পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।
এছাড়া জাতীয় প্রেসক্লাব, নয়া পল্টন, মিরপুর ১০, সাইন্সল্যাবসহ ঢাকার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতির খবর পাওয়া গেছে।