সহযোগিতার ‘নতুন নতুন ক্ষেত্র উম্মোচনে’ পারস্পরিক বিশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
Published : 20 Jan 2025, 10:26 PM
পারস্পরিক সহযোগিতার ‘বিশ্বাস’ পুনর্ব্যক্ত করে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে তার অভিষেকের দিনে ‘শুভ কামনা’ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “ডনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় প্রধান উপদেষ্টা তাকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছিলেন।
“সেখানে তিনি দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্ত করে বলেছিলেন, পারস্পরিক সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্র উন্মোচনের জন্য দুই দেশ কাজ করবে।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “আমরা সেই বিশ্বাস পুনর্ব্যাক্ত করছি এবং ডনাল্ড ট্রাম্পের নতুন মেয়াদ শুরুতে তাকে শুভকামনা জানাই।”
নভেম্বরে ট্রাম্প ভোটে জেতার পর প্রধান উপদেষ্টা শুভেচ্ছা বার্তাটি পাঠিয়েছিলেন গত ৬ নভেম্বর। সেখানে তিনি বলেছিলেন, “বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব ও দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট অংশীদারত্ব রয়েছে। আগের মেয়াদে আপনার নেতৃত্বকালে সেই সম্পর্ক আরও গভীর ও সুসংহত হয়েছিল।
“সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে আমি আপনার সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। বন্ধুত্বপূর্ণ দুই দেশ অংশীদারত্বের নতুন ক্ষেত্র উন্মোচনে কাজ করলে অমিত সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।”
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনাবসানের পর ক্ষমতা আসে ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।
শেখ হাসিনার অভিযোগ, তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা রয়েছে, যা বাইডেন প্রশাসন অস্বীকার করেছে।
নভেম্বরে বাইডেনের দলের প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে ট্রাম্প জেতার পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বাস দেখিয়েছেন।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সম্প্রতি ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে’ ইউনূস-নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গির উপর।
তবে বাইডেন প্রশাসনের মত ট্রাম্পের সঙ্গে একই রকমভাবে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কীভাবে চলবেন বলে পরিকল্পনা করছেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপক ইউনূস গত নভেম্বরে আল-জাজিরাকে বলেন, “অতীতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ হয়নি, তাই ব্যক্তিগতভাবে তার সঙ্গে আমার কোনো সমস্যা নেই।
“আপনি যদি রিপাবলিকান পার্টির কথা বলেন, আমার বন্ধু আছে, ডেমোক্রেটিক পার্টিতে আমার বন্ধু আছে।”
সরকার পতনের পেছনে শেখ হাসিনা যে বাইডেন প্রশাসনকে দায়ী করছেন, সে বিষয়ে এক প্রশ্নে ইউনূস বলেছিলেন, “আপনি যদি বাংলাদেশে থাকেন তাহলে আপনি এই ধরনের (তত্ত্ব) জিনিসের জন্য পাগল হয়ে যাবেন।
“এরা হল সেই ছাত্র- যারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে, জীবন দিয়েছে এবং চারদিক থেকে উন্মত্ত জনতা যখন তাদের (গণভবন) বাড়িতে ঢুকছে, তখন লক্ষ লক্ষ জনতা তাদের বাড়ির দিকে এগিয়ে গেছে।”
ইউনূস বলেন, “তার পরিবার বলছিল, এবার পালানোর সময় হয়েছে, কারণ তা না হলে জনতা পুরো বাড়িটা দখল করে নেবে এবং এটা হয়ে যাবে। তাই তিনি (শেখ হাসিনা) সেনাবাহিনীকে আমন্ত্রণ জানান তাকে দেশের বাইরে যেতে সাহায্য করার জন্য এবং দেশত্যাগ করে তার ভারতে যেতে সহায়তা করে সেনাবাহিনী।
“কীভাবে (ক্ষমাতুচ্যত) হয়েছিল, এটাই হচ্ছে ঘটনা। সেনাবাহিনী বা কাউকে পাঠানোর বিষয়ে কেউ কাউকে নির্দেশ দিচ্ছে-ব্যাপারটা সেরকম নয়। এটি একটি ছাত্র আন্দোলন এবং দেশের সব মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত।”
পুরনো খবর
হাসিনা নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ভাবলেও বাস্তবতা ভিন্ন: ইউনূস
বাংলাদেশে 'সংখ্যালঘু নির্যাতন' আমি থাকলে ঘটত না: ট্রাম্প