Published : 16 Dec 2018, 12:31 PM
আমাদের পাড়ায় এক বুড়ো ফেরিওয়ালা ছিলেন
পতাকার পসরা সাজিয়ে একটা গাছের নিচে বসে থাকতেন।
সবুজ জমিনে লাল টকটকে সূর্য বসানো পতাকা।
ছোট বড় নানা আকারের পতাকা তাঁর চারপাশে ওড়াউড়ি করতো
একদল রঙিন পাখির মত তাঁকে ঘিরে নাচতো ছোট পতাকাগুলো
মাঝারি পতাকাগুলো একটু নুয়ে পড়ে তাঁর মাথার ওপর ছায়া মেলে ধরতো।
সবচে' বড় পতাকাটা জননীর আঁচলের মতো মায়া জড়িয়ে রাখতো তাঁর গায়ে
তাঁকে মনে হতো পতাকার গাছ। পতাকার পাতা নাড়িয়ে দিনমান হাওয়া দিতেন বুড়ো।
হাওয়ার ঢেউয়ে ঢেউয়ে চারপাশে ছড়িয়ে পড়তো রঙের কুহক।
তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, বুড়ো, পতাকার দাম কত? একটা কিনতে চাই।
বুড়ো চোখ পিটপিট করে বললেন, দাম আছে গো! দিতে পারবে?
আমি বলি, হুম, পারবো। আমার বুকপকেটে খুচরো টাকা আছে।
বুড়ো বলেন উঁহু, বুকপকেটে পতাকার দাম থাকে না গো!
তা হলে? কোথায় থাকে?
বুড়ো তার জামা খুলে শীর্ণ বুকে আঙুল ঠুকে বলেন, বুকের খোড়লের পকেটে গো!
একটা লাল টাকা আছে গো। কাঁচা টাকা!
আমি তো ওটা দিয়েই কিনেছি এই পতাকা! আমি পতাকা বেচি না!
তা হলে, পতাকা সাজিয়ে বসে আছ কোন বুড়ো?
বুড়ো বলেন, ভাল করে দেখ গো, আমি শহীদের আত্মা সাজিয়ে বসে আছি।