হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির দৌড়ে প্রথম সারির খেলোয়াড় যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন। তবে, উত্তর কোরিয়ার মতো বেশ কিছু দেশ এটি নিয়ে পরীক্ষা চালানোর দাবি করে আসছে।
Published : 28 Apr 2024, 11:58 PM
রাশিয়া ও চীনের মতো পরাশক্তিকে টক্কর দিতে এ দশক শেষ হওয়ার আগেই নিজস্ব সেনাবাহিনীর জন্য দেশে উৎপাদিত ‘হাইপারসনিক ক্রুজ’ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা করছে যুক্তরাজ্য।
রোববার ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে চাপের মধ্যে আছেন যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্ব। সে লক্ষ্যে, তারা এমন একটি অস্ত্র তৈরি করছেন, যেটি ‘মাক ৫’ অর্থাৎ শব্দের চেয়েও পাঁচগুণ দ্রুতগতিতে উড়তে সক্ষম।
স্কাই নিউজ বলছে, যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় চায়, ক্ষেপণাস্ত্রের নকশা ও নির্মাণকাজ যেন যুক্তরাজ্যেই হয় ও সেটা যেন ২০৩০ সালের মধ্যেই ব্যবহার উপযোগী হয়ে ওঠে।
তবে পরিকল্পনাটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে টেলিগ্রাফ। এ ছাড়া, ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূমি, সমুদ্র বা আকাশ, যে কোনো জায়গা থেকে নিক্ষেপণযোগ্য হবে, সে বিষয়েও কোনও সিদ্ধান্ত আসেনি।
এর আগে ২০৩০ সাল নাগাদ যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা খাতে নিজেদের সামগ্রিক দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির আড়াই শতাংশ ব্যয় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।
ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের বেলাতেও হাইপারসনিক গতি অর্জন করা সম্ভব। তবে, এক্ষেত্রে ভিন্নতা থাকে এর চালচলনে। সাধারণত এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের গতিপথ আগে থেকেই নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। তবে, হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের বেলায় উৎক্ষেপণের পর এর গতিপথ পরিবর্তনের সুযোগ মেলে। ফলে, এগুলো ধ্বংস করাও কিছুটা জটিল।
হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির দৌড়ে প্রথম সারির খেলোয়াড় হল যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন। তবে, উত্তর কোরিয়ার মতো বেশ কিছু দেশ এটি নিয়ে পরীক্ষা চালানোর দাবি করে আসছে।
ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির এ পরিকল্পনাটি যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের একটি যৌথ নিরাপত্তা চুক্তির অংশ, যার নাম ‘পিলার টু অফ অস্ট্রেলিয়া-ইউকে-ইউএস’।
গত মাসে ওশেনিয়া অঞ্চলে অবস্থিত মার্শাল আইল্যান্ডসে হাইপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যার লক্ষ্য ছিল, নিজেদের প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্রতিদ্বন্দ্বী চীনকে বার্তা পাঠানো। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বেশ কিছু সংখ্যক হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে দেশটি, যার সর্বশেষ নজির এটি।
এদিকে, জাতীয় নিরাপত্তাকে কারণ দেখিয়ে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র বিকাশ নিয়ে স্কাই নিউজকে বিস্তারিত কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র।
তবে তিনি নিশ্চিত করেছেন, যুক্তরাজ্যের ‘সার্বভৌম ক্ষমতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে’ হাইপারসনিক প্রযুক্তি নিয়ে সামনে তারা আরও কাজ করবে।
“আমরা বর্তমান ও ভবিষ্যতের বিভিন্ন ঝুঁকি এড়াতে সামরিক খাতে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখব।”