মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যংকগুলোকে জাল অর্থ লেনদেনের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুনঃনিরীক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির প্রশাসন। চলতি বছর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরির ঘটনাকে সতর্কতার কারণের উদাহরণ হিসেবে নিচ্ছে তারা।
Published : 08 Jun 2016, 10:18 PM
রয়টার্স জানিয়েছে, এই আদেশ জারির দুই সপ্তাহ আগে মার্কিন ব্যাংকগুলোকে যে কোনো ধরনের সাইবার হামলার চিহ্ন খোঁজার পরামর্শ দিয়েছিল ফেডারেল বুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। নির্দেশে ব্যাংকগুলোকে যে কোনো ধরনের প্রযুক্তিগত খুঁত খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে।
মার্কিন সরকারের এই সতর্কবাণী থেকে বোঝা যায়, তারা দেশটির ব্যাংকগুলোর উপরে সাইবার হামলার আশংকা করছে। বড় বড় মার্কিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত অর্থ লেনদেনে প্রচলিত সুইফট নেটওয়ার্কের উপর নির্ভর করে। এই ব্যবস্থা হ্যাকারদের কব্জায় গেলে তা আন্তর্জাতিক অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেবে বললে ভুল হবে না, ভাষ্য রয়টার্স-এর।
চলতি বছরের মার্চে বাংলাদেশ ব্যাংকের উপর সাইবার হামলার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে ব্যাংকগুলোর উপরে সাইবার হামলার আশংকা বেড়ে গিয়েছে। বাংলাদেশে হ্যাকারদের এই আক্রমণের খবর ফাঁস হলে আরও কিছু ঘটনা সামনে উঠে আসে। যার মধ্যে রয়েছে ইকুয়েডরের বানকো দেল অস্ট্রো থেকে ১২ মিলিয়ন ডলার চুরি এবং ভিয়েতনামে তিয়েন ফং ব্যাংকের উপরে হামলা।
মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেম-এর প্রাক্তন সদস্য ডান গাইডো জানান, তিনি আশংকা করছেন হ্যাকারদলটি পুনরায় এ ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বর্তমানে সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান 'ট্রেইল অফ বিটস'-এর প্রধান নির্বাহী হিসেবে কর্মরত গাইডো জানান, হ্যাকার দলটি দক্ষ এবং অভিজ্ঞ। তারা জানে কীভাবে নিঃশব্দে সাইবার স্পেসে প্রবেশ করে হামলা চালিয়ে কাজ শেষে বেরিয়ে যেতে হয়।
দ্য ফেডারেল ফিনান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন এক্সামিনেশন কাউন্সিল (এফএফআইইসি) ব্যাংকগুলোকে বিভিন্ন ঝুঁকিনাশক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলে। এর মধ্যে রয়েছে সিস্টেম নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে লেনদেনের উপর নিয়ন্ত্রণ, অথেনটিকেশন, অথোরাইজেশন, ফ্রড ডিটেকশন বা প্রতারণা চিহ্নিত করা এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এফএফআইইসি-এর পাঠানো নির্দেশনাপত্র হয়ত ব্যাংকগুলোর উপর খুব একটা প্রভাব ফেলবে না, কারণ তারা এ ধরনের পরামর্শ পেয়ে অভ্যস্ত।
আর্থিক নিরাপত্তাবিষয়ক পরামর্শদাতা শেন শুক জানান, তিনি চান ব্যাংকের কর্মচারীরা ব্যাংক প্রদত্ত যে মেসেজিং সুবিধা ভোগ করে, তার উপরে তীক্ষ্ণ নিয়ন্ত্রণ আনা হোক।