সাম্প্রতিকালে ব্রিটিশ হারবার সিলের একটি দলে ভয়াবহ সংখ্যা বিপর্যয় ঠেকাতে সেইন্ট অ্যান্ড্রু'স ইউনিভার্সিট-এর সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী গবেষণা সংস্থা (এসএমআরইউ) এবং ব্রিটিশ টেলিকম প্রতিষ্ঠান ভোডাফোন যৌথভাবে একটি সিল পর্যবেক্ষণ প্রকল্প শুরু করতে যাচ্ছে।
Published : 31 Mar 2016, 10:28 PM
স্কটল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডের উপকূলে একসময় এ প্রাণি খুবই পরিচিত দৃশ্য হলেও সাম্প্রতিক সময়ে এদের মারা যাওয়ার খবর প্রচুর পাওয়া যায় বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড মিরর। এই পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে স্কটল্যান্ডের উত্তর এবং পূর্ব উপকূলের ৯০ শতাংশ সিল-ই হারিয়ে গেছে।
সিল-এর সংখ্যায় এই ভয়াবহ হ্রাসের কারণ হিসেবে এ পর্যন্ত সমুদ্রমুখী বায়ুপ্রবাহ, নৌযানগুলোর টার্বাইন, মানবসৃষ্ট দূষণ, সিলের স্বগোত্রভুক প্রবণতাসহ অনেক কিছুকেই দায়ী করা হলেও বিজ্ঞানীরা এর প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে আগ্রহী।
সিলগুলোর সঙ্গে 'মেরিন ট্যাগ' হিসাবে একটি ছোট মোবাইল ফোন সংযুক্ত করা হবে, যা এদের যাত্রাপথে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের সঙ্গে সামুদ্রিক পরিবেশ সংক্রান্ত তথ্য প্রেরণ করবে।
এসএমআরইউ-এর সহকারী পরিচালক বার্নি ম্যাককনেল মিরর অনলাইন-কে বলেন, "আমাদের এ বিপর্যয়ের রহস্য সমাধান করতে হবে, কারণ এভাবে যদি চলতে থাকে তবে আর কোন হারবার সিল বাকি থাকবে না।"
এ ঘটনাকে তিনি 'সামুদ্রিক বিপর্যয়ের মৃত্যুবার্তাবাহী' হিসেবে উল্লেখ করেন। এ ছাড়াও 'এই রহস্য সমাধান জাতীয় গুরুত্বের বিষয়' এবং 'এই বিপর্যয়ের বিপরীতকরণ নৈতিক দায়িত্ব' বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সাম্প্রতিককালে 'কর্ক্সক্রু ডেথ'-এর শিকার কিছু সিলের ছিন্নবিচ্ছিন্ন মৃতদেহ সমুদ্র উপকূলে ভেসে আসার পরই এই বিপর্যয় যুক্তরাজ্যের জাতীয় নজরে আসে।
প্রাথমিকভাবে প্রাণিগুলোর এমন অদ্ভুত ও বীভৎস মৃত্যুর পেছনে নৌ-চলাচল, মানবসৃষ্ট সামুদ্রিক দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন বা খাবারের সংকটকে কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হলেও এর সম্ভাবনা খুবই কম বলে জানান ড. ম্যাককনেল। তার মতে, সিলগুলো দেখতে যথেষ্ট হৃষ্টপুষ্ট এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী।
সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ধূসর সিল স্বগোত্রভুক এবং এরা স্বজাতি হত্যার জন্য দায়ী হতে পারে।
এ বছরই ওর্কনি অঞ্চলের সমুদ্রে বসবাসকারী সিলগুলোর সঙ্গে এ প্রযুক্তি সংযুক্ত করা হবে। এই প্রযুক্তি সংযোজন ও তা থেকে পাওয়া তথ্যের গবেষণার মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষণবাদীরা স্কটল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যে অবশিষ্ট সিল রক্ষা এবং সামুদ্রিক এলাকাভিত্তিক নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্কটিশ মন্ত্রীদের সহায়তার আশা রাখছেন বলে জানায় মিরর।