নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসির বিরুদ্ধে এক বিধবার জমি দখলে ভূমিদস্যুদের সহযোগিতা এবং ওই নারীর স্বজনদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে পুলিশের গঠিত তদন্ত কমিটি।
Published : 17 May 2017, 01:19 AM
ওসি মুহা. সরাফত উল্লাহর সঙ্গে একই কাজে যুক্ত পরিদর্শক(তদন্ত) আবুল হোসেন ও এসআই ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া্র সুপারিশও করেছে তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটি প্রধান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান মঙ্গলবার জেলা পুলিশ সুপারের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
মোস্তাফিজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিধবা নারী আসমা বেগমের অভিযোগ এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে।”
এদিকে কারাগারে ১৯ দিন থাকার পর মঙ্গলবার জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বিধবা আসমার ভাই মোহাম্মদ আলী, তার জামাতার কর্মচারী মো. ওমর ফারুক ও ইমরান।
আসমার একটি জমি দখলের জন্য চাপ দিতে এই তিনজনকে মাদক মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
আসমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার ভাইসহ তিনজন বিনা অপরাধে ১৯ দিন জেল খেটেছে এই ওসির কারণে।”
সানারপাড় এলাকার মোহাম্মদ হোসেন আলী সাউদের বিধবা মেয়ে আসমার অভিযোগ, উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত তাদের ৪৯ দশমিক ৫০ শতাংশ জমির একাংশ জোর করে দখল করে নেন সিদ্ধিরগঞ্জ বাজার এলাকার আব্দুল্লাহ আল মামুনের ছেলে সাকিব বিন মাহমুদ ও মো. মহসিন এবং নূর মোহাম্মদের ছেলে মনির।
গত ২৫ এপ্রিল আসমার আবেদেন আদালত ওই জমিতে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়।
আদালতের আদেশের নথি নিয়ে ওসি সরাফতের কাছে গেলে তিনি হুমকি দিয়ে থানা থেকে বের করে দেন বলে আসমার অভিযোগ।
এরপর আবুল হোসেন ঘুষ দাবি করেন বলে আসমার অভিযোগ। পাশাপাশি ওই জমি থেকে আলীসহ অন্যদের ধরে নিয়ে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ঘটনাটি আলোচনায় ওঠার পর সোমবার স্থানীয় এক সংসদ সদস্য ডেকে নিয়ে জমির দখল বুঝিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নিতে বলেছিলেন বলে জানান আসমা। তিনি আরও বলেন, এরপর ওসি সরাফত উল্লাহও এখন বলছেন যে তার ‘ভুল’ হয়েছিল।
এই বিষয়ে ওসি সরাফত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এমপি মহোদয়ের উদ্যোগে বসে বৈঠকে বিষয়টির মীমাংসা হয়েছে। এমপি সাহেব জায়গার কাগজপত্র বের করার বলেছেন, বের করলে তিনি এ বিষয়ে উদ্যোগ নিবেন। আসমা বেগম থানায়ও এসেছিলেন। আমি শুনেছি কাগজপত্র দাখিল করেছেন।”