মালামালসহ আতিয়া মহল ছেড়েছেন বাসিন্দারা

অপারেশন টোয়াইলাইটের কারণে ১৮ দিন পর মালামাল নিয়ে আতিয়া মহল ছেড়েছেন সেখানকার ২৮টি পরিবার।

মঞ্জুর আহমদ সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 April 2017, 01:07 PM
Updated : 11 April 2017, 03:46 PM

মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আতিয়া মহলের ভাড়াটিয়াদের কাছে মালামাল বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জেদান আল মুসা জানান।

গত ২৪ মার্চ জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকায় আতিয়া মহল নামের পাঁচ তলা ভবন ঘিরে রাখে পুলিশ। পরে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো দলের অপারেশন ‘টোয়াইলাইটে’ নিহত হয় এক নারীসহ চার জঙ্গি।

গত ২৮ মার্চ বিকেলে চার দিনের অভিযান শেষে সেনাবাহিনী ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ সমাপ্তি ঘোষণা করে।

আতিয়া মহলের নিচ তলার ছয়টি ইউনিটে জঙ্গিরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখেছিল বহু আইইডি। ফলে এ ইউনিটগুলো নিষ্ক্রিয় করতে সব আসবাবপত্র ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় বলে র‌্যাব জানিয়েছিল।

আতিয়া মহলে জঙ্গি আস্তানা গড়ে তোলা ও অভিযানে চার জঙ্গি নিততের ঘটনায় গত ৪ এপ্রিল সন্ত্রাস দমন আইনে মোগলাবাজার থানায় পুলিশ অজ্ঞাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে বলে জানিয়েছেন মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার বাসুদেব বণিক।

পুলিশ কর্মকর্তা মুসা বলেন,  পুলিশ তালিকা অনুযায়ী আতিয়া মহলের ২৮ পরিবারের মধ্যে মালামাল হস্তান্তর করা হয়েছে।

“বর্তমানে ভবনটি বসবাসের উপযোগী নয়। কিছু আইনি প্রক্রিয়া শেষে ভবন মালিক পরবর্তী ব্যবস্থা নিবেন।”

নিচতলার অধিকাংশ মালামালই বোমা আর গুলির আঘাতে নষ্ট হয়ে গেছে এবং তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম তলার বাসিন্দাদের সব আসবাবপত্র ও অন্য মালামাল অক্ষত অবস্থায় পেয়েছেন বলে বলে দাবী করছেন বাসিন্দারা।

ভবনটির নিচতলার বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক পিয়ালী চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ আমার ফ্লাটের সব আসবাবপত্র ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। পরীক্ষার সনদসহ মূল্যবান অনেক জিনিস নষ্ট হয়ে গেছে। খালি হাতে ফিরতে হয়েছে আমার পরিবারকে।”

চতুর্থ তলার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন,  “সব মূল্যবান জিনিসপত্র অক্ষত অবস্থায় পেয়েছি। মেয়ের স্কুলের বইপত্রসহ সবকিছু ভবনে রেখে এক কাপড়ে বেরিয়েছিলাম। এখন সব পেয়ে আমরা খুশি।”

আতিয়া মহল ছেড়ে যাওয়া বাসিন্দাদের অনেক অন্যত্র বাড়ি ভাড়া করেছেন, আবার অনেকে স্বজনদের বাসায় উঠেছেন বলে জানিয়েছেন তারা।

আট দিন অভিযান শেষে সোমবার পাঁচতলা ভবনের ২৮টি ইউনিটের সবগুলো কক্ষ পরীক্ষা করে র‌্যাবের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল অভিযান শেষ করে।

সেনাবাহিনীর অভিযান শেষ হওয়ার ছয় দিন পর গত ৩ এপ্রিল দুটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে র‌্যাব। এর আগে ২৭ মার্চ সেখান থেকে এক নারী ও এক পুরুষের মরদেহ পুলিশের কাছে দেয় করে সেনাবাহিনী।

ময়নাতদন্ত শেষে চারজনকে সিলেটের হযরত মানিকপীর গোরস্থানে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়।