সিলেটের তারাপুর চা-বাগান দখলে ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতি মামলায় ১৪ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে আদালতে আপিল আবেদন দাখিল করেছেন ব্যবসায়ী রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাই।
Published : 16 Feb 2017, 01:24 PM
আসামিদের আইনজীবীরা বৃহস্পতিবার সিলেট মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধার আদালতে এ আবেদন দাখিল করেন বলে জানান পিপি মফুর আলী।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, আগামী ৮ মার্চ আপিল গ্রহণের বিষয়ে শুনানির দিন ঠিক করেছে আদালত।
গত দুই ফেব্রুয়ারি সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরো দণ্ডবিধির চারটি ধারায় রাগীব আলী ও তার ছেলেকে মোট ১৪ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন।
রাগীব আলী ও আবদুল হাইকে দণ্ডবিধির ৪৬৬ ধারায় ছয় বছর, ৪৬৮ ধারায় ছয় বছর, ৪৭২ ধারায় এক বছর ও ৪২০ ধারায় এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
পিপি মফুর বলেন, আপিল আবেদন দাখিলের পাশাপাশি তাদের জামিন আবেদনও করা হয়। শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন।
১৯৯০ সালে ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতি করে প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া সেবায়েত সাজিয়ে তারাপুর চা-বাগানের ৪২২ দশমিক ৯৬ একর দেবোত্তর সম্পত্তি রাগীব আলীরা দখল করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
১৯৯৯ সালের ২৫ অগাস্ট ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তারাপুর চা-বাগান নিয়ে আলোচনার পর মামলার সিদ্ধান্ত হয়।
২০০৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালি থানায় দুটি মামলা করেন সিলেট সদরের তৎকালীন ভূমি কমিশনার এসএম আব্দুল কাদের। একটি ভূ-সম্পত্তি আত্মসাতের মামলা আর অপরটি হল স্মারক জালিয়াতি মামল।
স্মারক জালিয়াতি মামলায় রাগীব আলী ও তার ছেলে হাইকে আসামি করা হয়।
ভূ-সম্পত্তি আত্মসাতের মামলার আসামি রাগীব ও হাই ছাড়াও আরও চারজন। তারা হলেন - তারাপুর চা-বাগানের সেবায়েত পংকজ কুমার গুপ্ত, রাগীবের আত্মীয় মৌলভীবাজারের রাজনগরের বাসিন্দা দেওয়ান মোস্তাক মজিদ, রাগীবের জামাতা আবদুল কাদির ও মেয়ে রুজিনা কাদির।
আসামিদের মধ্যে রাগীব, হাই ও মোস্তাক মজিদ আটক রয়েছেন। জামিনে আছেন সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্ত। আর রাগীবের জামাতা আবদুল কাদির ও মেয়ে রুজিনা পলাতক।
গত বছরের ১০ জুলাই দুটি মামলায়ই আদালতে অভিযোগপত্র দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সারোয়ার জাহান। এরপর ১০ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। ওই দিনই বিকেলে সপরিবার ভারতে পালিয়ে যান রাগীব আলী। পরে রাগীব ও হাইকে আটক করে দেশে এনে কারাগারে পাঠানো হয়।
ভূ-সম্পত্তি আত্মসাতের মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ঠিক করেছে আদালত।