জন্মস্থান ছেড়ে বিলুপ্ত ছিটমহলের ৬৩ জন বাসিন্দা বুড়িমারী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে গেছে।
Published : 19 Nov 2015, 06:45 PM
বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টায় প্রথম দফায় লালমনিহাটের এই ৬৩ জনকে দিয়ে এ যাত্রা শুরু হল।
এরপর পর্যায়ক্রমে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, ও পঞ্চগড়ের ৯৬৬ জনের যাওয়ার কথা রয়েছে। এ কার্যক্রম চলবে আগামী ৩০ নভেম্বর।
লালমনিরহাট:
লালমনিরহাটের বিলুপ্ত ছিটমহল থেকে বৃস্পতিবার প্রথম দফায় হাতীবান্ধার উত্তর গোতামারী বিলুপ্ত ছিটমহল থেকে ১৮ পরিবারের ৬৩ জন ভারতে গেছেন।
সদ্য বিলুপ্ত ৫৯টি ছিটমহলের মধ্যে পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলার ৪০ পরিবার ভারত যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করে। ওই পরিবারগুলো পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থলবন্দর বৃহস্পতিবার থেকে পর্যায়ক্রমে বাস ও ট্রাকে করে ভারতের কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ এলাকার ক্যাম্পে যাবেন।
বৃহস্পতিবার ওই পথে দুটি ছিটমহলের ৬৩ জন ভারতে গেছেন। ২৩ নভেম্বর যাবেন পাটগ্রামের ১১২, ১১৫ ও ১১৯ বাঁশকাটা, ১১৪ লতামারী, ১১৫ খড়খড়িয়া ছিটমহলের ৩১ পরিবারের ১৩৩ নারী-পুরুষ ও শিশু।
পাটগ্রাম উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. নূর কুতুবুল আলম জানান, ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে তাদের ভারত যাওয়া সম্পন্ন হবে।
কুড়িগ্রাম:
ভারতের ‘ট্রাভেল কাম আইডেনটিটি পাস’ নেওয়া কুড়িগ্রামের বিলুপ্ত ছিটমহল দাশিয়ারছড়া, ছোট গাড়লঝাড়া ও বড় গাড়লঝাড়ার ২৮১ জন বাসিন্দা ২২ নভেম্বর থেকে ওপারে যাওয়া শুরু করবে।
বাংলাদেশের বাঘভান্ডার ও ভারতের সাহেবগঞ্জ সীমান্ত চেকপোস্ট দিয়ে তারা ভারতে প্রবেশ করবে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক খান মোহাম্মদ নুরুল আমিন।
তিনি জানান, এর মধ্যে ২২ নভেম্বর ১৬ পরিবার, ২৪ নভেম্বর ৩০ পরিবার এবং ২৭ নভেম্বর ২৭ পরিবার বাংলাদেশ ছাড়বে। এ সময়ের মধ্যে গেলে ৩০ তারিখ যেতে পারবে।
এছাড়া ১৯ পরিবারের ৭৩ জন ভারত না যাওয়ার আবেদন করেছে।
পঞ্চগড়:
পঞ্চগড়ের ৩৬টি বিলুপ্ত ছিটমহল থেকে ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণকারী আগামী ২২ নভেম্বর থেকে দেশটিতে যাওয়া শুরু করবেন।
আগামী ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত চার দফায় ৯৮টি পরিবারের ৪৮৯ জন ভারতে যাবেন বলে জানান পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম আজম।
তিনি বলেন, আগামী ২২ নভেম্বর (রোববার) প্রথম দফায় পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিলুপ্ত গারাতি, দেবীগঞ্জের নাটকটোকা, বেহুলাডাঙ্গা, কাজলদিঘী ও বোদা উপজেলার নাজিরগঞ্জ ছিটমহলের ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণকারী ১৫টি পরিবারের ৫৫ জন ভারতে যাবেন। এদের নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চিলাহাটী-হলদিবাড়ী সীমান্ত পথ দিয়ে ভারতে পাঠানো হবে
এ জন্য আগের দিন তাদেরকে বোদা উপজেলার কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদে মালামালসহ উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এর পর ২৩ নভেম্বর ৩১টি পরিবারের এক নবজাতকসহ ১৭৭ জন, ২৪ নভেম্বর ২৯টি পরিবারের এক নবজাতকসহ ১৪৯ জন এবং সর্বশেষ ২৬ নভেম্বর ২৩টি পরিবারের ১০৮ জন ভারতে যাওয়ার কথা রয়েছে।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় নির্ধারিত দিনে নির্দিষ্ট পয়েন্ট থেকে গাড়িতে করে তাদের সীমান্তের অস্থায়ী ক্যাম্পে পৌঁছে দেওয়া হবে। সেখান থেকে তাদের ভারতীয় কর্তৃপক্ষ নিয়ে যাবে।
চলতি বছরের ৬ থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত যৌথ জনগণনা জরিপে পঞ্চগড়ের বিলুপ্ত ছিটমহলের ৪৮৭ জন ভারতে যেতে আবেদন করেন। এরমধ্যে দুই শিশু জন্ম হওয়ায় তারাও ভারতে যাচ্ছে।
নীলফামারী:
নীলফামারীর বিলুপ্ত চার ছিটের একজনও ভারত যাওয়ার জন্য আবেদন করেনি বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. জাকীর হোসেন।