সিটি নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘসহ বিদেশিদের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
Published : 03 May 2015, 01:12 AM
তথ্য-উপাত্ত ছাড়াই তারা বক্তব্য দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
শনিবার কুষ্টিয়ায় সাংবাদিকদের মন্ত্রী বলেন, “জাতিসংঘসহ বিদেশি বন্ধুরা যে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন তারা ১২ ঘণ্টা/২৪ ঘণ্টার মধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। তিন হাজার কেন্দ্রের রিপোর্টই তাদের কাছে নাই।”
গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ, উত্তর ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে মাঝপথে ভোট বর্জন করেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা।
এ নিয়ে বিদেশিদের কাছেও অভিযোগ করেছে দলটি।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্ডার সেক্রেটারি ওয়েন্ডি শেরমান শুক্রবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসায় গেলে খালেদা জিয়া অভিযোগের পক্ষে ‘তথ্য-প্রমাণ’ তুলে ধরেন বলে দলটির নেতারা জানিয়েছেন।
তার আগে দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করে সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন।
নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণকে ‘স্বস্তিকর’ বললেও মাঝপথে তাদের সরে দাঁড়ানোকে মহাসচিব ‘দুঃখজনক’ হিসাবে উল্লেখ করে ‘উদ্বেগ জানিয়েছেন’ বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোকে দায়িত্ব দেওয়ার কথাও প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
এদিকে নির্বাচনে অনিয়ম এবং বিএনপির ভোট বর্জনের ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
শুক্রবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে ওয়েন্ডি শেরমান বলেন, “নির্বাচনে অনিয়ম এবং ভোটের মাঝখানে বিএনপির বয়কট- দুই ঘটনাতেই আমরা হতাশ।”
অনিয়মের অভিযোগ তদন্তেরও আহ্বান জানান তিনি।
তাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা কারও খাইও না, পরিও না। নির্বাচনের ১২ ঘন্টার মধ্যে মন্তব্য করলেন, এটা কি করতে পারেন? কী তথ্য-উপাত্ত আছে?
“স্বল্প সময়ে কী যন্ত্রের সাহায্যে তিন হাজার ভোটকেন্দ্রের তথ্য-উপাত্ত পেলেন? ”
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘আগুন সন্ত্রাসী’ আখ্যায়িত করে তার পক্ষে কথা না বলার আহ্বান জানান জাসদ সভাপতি ইনু।
“আগুন সন্ত্রাসী খালেদা জিয়াকে রাজনীতিতে যোগ করার যে তদ্বির শুরু হয়েছে তা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ঘরে খাল কেটে জঙ্গি কুমির আনার শামিল। যোগ নয়, আগুন সন্ত্রাসীদের বিয়োগের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র মজবুত হবে,” বলেন তিনি।
নির্বাচনে ত্রুটি-বিচ্যুতির অভিযোগ এসে থাকে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই নির্বাচনে শুধু বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা নয়, আওয়ামী লীগ সমর্থিত, জাসদ সমর্থিত ও স্বতন্ত্রী প্রার্থীরাও ত্রুটি-বিচ্যুতির অভিযোগ করেছেন।
“নির্বাচনে ত্রুটি-বিচ্যুতির অভিযোগ এক জিনিস। আর নির্বাচনটা একেবারে হয়নি- এ কথাটা বলা আরেক জিনিস।”
খালেদা জিয়া পূর্ব পরিকিল্পিতভাবে দেশে ‘সাংবিধানিক/রাজনৈতিক সংকট’ তৈরি করার জন্য নির্বাচনকে ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, “খালেদা জিয়া আগুন যুদ্ধের পথ থেকে সরে আসেননি। বরঞ্চ উনি আবার বাংলাদেশকে বিপদের মুখে ফেলার চেষ্টা করছেন।”
শনিবার কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা পরিষদ ভবনের ভিত্তিফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন হাসানুল হক ইনু। অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
এ সময় মিরপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা আজাদ রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান কামারুল আরেফিন, জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসীন, মিরপুর উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলী উপস্থিত ছিলেন।