চট্টগ্রামে আ. লীগের ‘নির্বাচনী’ বৈঠকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা

সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে একটি বৈঠকে করেছেন চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ ও তাদের জোটসঙ্গী দলের নেতারা, যাতে একজন মন্ত্রী ও দুজন প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 March 2015, 10:40 AM
Updated : 31 March 2015, 12:23 PM

মন্ত্রী কিংবা প্রতিমন্ত্রীদের নির্বাচনী প্রচারে অংশ না নেওয়ার ওপর বিধি-নিধেষের মধ্যেই মঙ্গলবার নগরীর জিইসি মোড়ের হোটেল পেনিনসুলার এই বৈঠকে ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বীর বাহাদুর ও সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, তিনি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন।

আনোয়ারার সংসদ সদস্য জাবেদ ভূমি প্রতিমন্ত্রী। বান্দরবানের সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী।   

রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী জাবেদ সাংবাদিকদের বলেন, “নির্বাচন নিয়ে দলীয়ভাবে বসছি। নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজি নিয়ে কথা হয়েছে। এখানে একাধিকবার নির্বাচিত অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা ছিলেন। তারা অভিজ্ঞতা বিনিময় করেছেন।”

এর আগে গত ২৪ মার্চ চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিনকে নিয়ে এক সভায় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ।

ওই সভা নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুললে রিটার্নিং কর্মকর্তা মেয়র প্রার্থী নাছিরকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেন।

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফের মালিকানাধীন হোটেল পেনিনসুলায় দুই ঘণ্টার এই বৈঠকে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাছির না থাকলেও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামে দলের শীর্ষ নেতারাসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যরা। সরকারি আইন কর্মকর্তারাও ছিলেন এই বৈঠকে।

এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী

নুরুল ইসলাম বিএসসি

নাছির যে ফোরামের প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে অংশ নিচ্ছেন, সেই নাগরিক কমিটির চেয়ারম্যান প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ইসহাক মিয়া, সদস্য সচিব নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে।

উপস্থিত ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম বিএসসি, কোষাধ্যক্ষ সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, উত্তর জেলার সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী।

সংসদ সদস্যদের মধ্যে ছিলেন জাসদের মঈনুদ্দিন খান বাদল, আওয়ামী লীগের এম এ লতিফ, শামসুল হক চৌধুরী, দিদারুল আলম ও মাহফুজুর রহমান মিতা।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কামাল উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম মহানগর পিপি ফখরুদ্দিন চৌধুরী, জেলা আইনজবী সমিতির সভাপতি মুজিবুল হক, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি আইয়ুব খান বৈঠকে ছিলেন।

বৈঠকের বিষয়ে সীতাকুণ্ডের সংসদ সদস্য দিদারুল আলম বলেন, “ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন মন্ত্রী হওয়ার পর আমাদের কখনও দাওয়াত দেননি। এই প্রথম দাওয়াত দিয়েছেন। আমরা উনার দাওয়াতে এখানে এসেছি।”

এম এ লতিফ বলেন, “প্রার্থী আ জ ম নাছিরের পক্ষে আমরা আলোচনায় বসেছি। নেত্রী যেহেতু সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, আমাদের দায়িত্ব কাজ করা। দলের নেতা-কর্মীরা নগরবাসীর দুয়ারে দুয়ারে যাবেন।”

মঈনুদ্দিন খান বাদল

বীর বাহাদুর

জাসদ নেতা বাদল বলেন, “এটি ১৪ দলের পরামর্শ সভা। আজ ১৪ দল আনুষ্ঠানিকভাবে আ জ ম নাছিরকে সমর্থন দিয়েছে। তাকে নির্বাচিত করতে আমরা কাজ করব।”

বৈঠকের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, “বৈঠকে তো চট্টগ্রামের সংসদ সদস্যরা ছিলেন। কোন কক্ষে কোন মন্ত্রীরা ছিলেন, আমি জানি না।”

প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর সাংবাদিকদের কিছু বলতে রাজি হননি।

মেয়র প্রার্থী নাছিরের নির্বাচনের বিষয়ে আগের কয়েকজন বললেও তা নাকচ করে নাগরিক কমিটির চেয়ারম্যান ইসহাক মিয়া বলেন, “আমরা দলের কাজে বসছিলাম, প্রার্থীর জন্য না।”

‘সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালা’ অনুযায়ী, সরকারের কোনো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী নির্বাচন পূর্ব সময়ে নির্বাচনী প্রচারণায় বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না।

এছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তাও কোনো নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ বা নির্বাচনী কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না বলে বিধিমালায় উল্লেখ আছে।