সুষমা স্বরাজের ঢাকা সফরকালে হরতাল হতে পারে- এই আশঙ্কা থেকে ‘প্রতিবেশী দেশের পরামর্শে’ যুদ্ধাপরাধের মামলার রায় স্থগিত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ।
Published : 24 Jun 2014, 03:22 PM
মঙ্গলবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “শুনেছিলাম আজকে একটা রায় আছে। সেজন্য সকাল থেকে রণসাজে সজ্জিত হয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের কর্তৃত্ব দেখাচ্ছে। পরে শুনলাম রায় হচ্ছে না। আমার এক হিতাকাঙ্ক্ষী বন্ধু বলেছেন, নয়া দিল্লি থেকে খবর এসেছে আজ রায় দেয়া যাবে না। কারণ কাল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ঢাকায় আসবেন।”
“ওই রায়ের প্রতিবাদে যদি হরতাল হয়, তাহলে সরকারের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশের বন্ধুত্বের সেই বেলুন ফুটো হয়ে যাবে। তাহলে কী বুঝলেন? বাংলাদেশের সব কিছু এখন বাইরের প্রতিবেশী দেশ থেকে নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে। সাউথ ব্লক থেকে।”
জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে অপরাজেয় বাংলাদেশ নামক সংগঠনের উদ্যোগে ‘আতঙ্কেরজনপদ: বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
তিনদিনের সফরে বুধবার ভারতের নতুন সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ঢাকা আসছেন।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির নেতৃত্বে আন্দোলনরত দলগুলোর অন্যতম জামায়াত ইসলামী। মঙ্গলবার এই দলটির প্রধান মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায়ের দিন নির্ধারিত ছিল।
তবে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে যুদ্ধাপরাধ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায় অপেক্ষমান রাখে। এর প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা হান্নান শাহ ওই মন্তব্য করেন। যদিও যুদ্ধাপরাধের এর আগের নয়টি রায়ের পর কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি বিএনপির পক্ষ থেকে।
হান্নান শাহ অভিযোগ করে বলেন, “সীমান্তে অহরহ গুলি করে মানুষ হত্যা করা হয়, কাটাতারের মধ্যে ফেলানি লাশ ঝুলে থাকে, প্রতিবেশী দেশের গোয়েন্দারা এসে ঢাকা থেকে আমাদের লোকজনকে তুলে নিয়ে যায়- এরকম অবস্থার মধ্যে আমাদের সার্বভৌমত্ব আছে কি?”
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, “একদিকে আমরা সংলাপের কথা বলছি। সরকার বলছে না সংলাপ নয়। অন্যদিকে রাষ্ট্রপতি জাতিসংঘে গিয়ে ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাই বিএনপির উচিৎ আর সংলাপের কথা না বলা।”
“এখন এমন আন্দোলন করতে হবে, একদিন সরকারই সংলাপের জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠবে।”
সরকারের উদ্দেশ্যে হান্নান শাহ বলেন, “এখনো সময় আছে, দ্রুত নির্বাচন দিন। নির্বাচন না দিলে আপনাদের বঙ্গোসাগর ও পদ্মা নদীতে ঝাঁপ দিতে হবে। এর পরিণতি ভালো হবে না।”
সংগঠনের সভানেত্রী ফরিদা মনি শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক রুহুল আমিন গাজী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, মুক্তিযোদ্ধা দলের উপদেষ্টা ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. হানিফ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।