৫ জানুয়ারির ‘ত্রুটিপূর্ণ’ নির্বাচন বাংলাদেশকে অস্থিতিশীলতার ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের এক সিনেট কমিটির শুনানিতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল।
Published : 12 Feb 2014, 12:19 AM
মঙ্গলবার সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটিতে ওই শুনানিতে তিনি আরো শঙ্কা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশে অস্থিরতা থাকলে তা দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
ক্যাপিটল হিলের সিনেট ডার্কসেন ভবনে কমিটির চেয়ারম্যান রবার্ট মেনেনদেজের সভাপতিত্বে এই শুনানিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পাশাপাশি পোশাক শিল্পের শ্রম পরিবেশ নিয়েও আলোচনা হয়।
এতে নিশা বিসওয়াল ছাড়াও অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্র শ্রম মন্ত্রণালয়ের ব্যুরো অব ইন্টারন্যাশনাল লেবার এফেয়ার্সের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি এরিক বিয়েল, এলায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার সেইফটি’র পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান এলেন টাউসার এবং বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওয়ার্কার সলিডারিটির নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আকতার।
৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে সিনেট কমিটিতে আগেও শুনানি হয়েছিল।
ওই কমিটির চেয়ারম্যান মেনেনদেজ রাজনৈতিক সঙ্কট এড়ানোর তাগিদ দিয়ে বাংলাদেশের নেতাদের চিঠি পাঠান, যা তিনি শুনানির প্রারম্ভিক বক্তব্যে তুলে ধরেন।
শুনানিতে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিসওয়াল বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে তার সরকারের মূল্যায়ন আইনসভার এই কমিটিতে তুলে ধরেন, যা যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের ওয়েবসাইটে প্রকাশ হয়েছে।
দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির বর্জনের মধ্যে গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।
নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি এবং সংবিধান মেনে নির্বাচনে অটল আওয়ামী লীগকে সংলাপের তাগিদ দিতে ভোটের আগে ঢাকা সফর করে গিয়েছিলেন নিশা বিসওয়াল।
শুনানিতে তিনি বলেন, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ওয়াশিংটন উদ্বিগ্ন।
“গত ৫ জানুয়ারি সরকার ত্রুটিপূর্ণ একটি নির্বাচন করেছে, যাতে প্রধান দুই দলের একটি দল অংশ নেয়নি।”
“এই নির্বাচনে বাংলাদেশেরন মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি। এর ফলে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা দেখা দিতে পারে, যার প্রভাব ওই অঞ্চলেও পড়বে।”
ভোটের আগে নভেম্বরে ঢাকা সফরের সময় দুই প্রধান নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে সংলাপের তাগিদ দেয়ার বিষয়টিও শুনানিতে তুলে ধরেন নিশা বিসওয়াল।
তিনি আশা করছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক এবং তার সঙ্গে ব্যবসায়ী নেতারা গণতন্ত্র সমুন্নত এবং অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে ‘সঠিক’ পদক্ষেপ নেবেন।
“বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে এবং তার হারানোরও অনেক কিছু আছে,” সতর্কবার্তা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী মন্ত্রী।
স্বাধীনভাবে নির্বিঘ্নে রাজনৈতিক মত প্রকাশের সুযোগ করে দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিও আহ্বান জানান তিনি।
সেইসঙ্গে বিরোধী দলকে শান্তিপূর্ণ পন্থায় কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান নিশা বিসওয়াল।