তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগকে চাপ দিতে প্রবাসীদের সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারেক রহমান।
Published : 21 May 2013, 01:49 PM
তত্ত্বাবধায়কের দাবি আওয়ামী লীগের প্রত্যাখ্যানের মধ্যে সোমবার লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতাদের নিয়ে এক বৈঠকে এই আহ্বান জানান তিনি।
সভায় বক্তব্যে (বক্তব্যের অডিও শুনুন) আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করেন তারেক। পদ্মা প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারও জড়িত বলে দাবি করেন তিনি।
পাঁচ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে অবস্থানকারী তারেক রহমানের এটাই প্রথম প্রকাশ্য সভা। তবে এর আগে ঘরোয়া কয়েকটি বৈঠকে তিনি অংশ নেন বলে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন।
খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক লন্ডনে অবস্থানের মধ্যেই বিএনপির কাউন্সিলে জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান অর্থাৎ দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা নির্বাচিত হন।
সোমবার পূর্ব লন্ডনের পাম ট্রি রেস্তোরাঁয় সভায় বক্তব্য রাখার আগে আরেকটি স্থানে সভায় বক্তব্য রাখার কথা ছিলো তারেকের।
তবে ডকল্যান্ড ক্রাউন প্লাজা হোটেলের ওই সভায় দুই পক্ষের হাতাহাতির পর তা বন্ধ করে দেয় পুলিশ। এরপর পাম ট্রি রেস্তোরাঁর সভায় বক্তব্য রাখেন তারেক।
বিভেদ ভুলে বিএনপি নেতাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে এক্ষেত্রে ওয়ান-ইলেভেনের কথা স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।
“ওই সময় মাঠ পর্যায়ের নেতাদের ঐক্যই বিএনপিকে ধরে রেখেছিলো।”
যুক্তরাজ্য বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতাদেরও ঐক্যবদ্ধ থাকার তাগিদ দেন তারেক। মতদ্বন্দ্ব থাকলে তার প্রকাশ দলীয় ফোরামেই রাখতে বলেন তিনি।
প্রথম আলোর সাম্প্রতিক একটি জরিপের তথ্য তুলে ধরে তারেক বলেন, “কিছুদিন আগে একটি পত্রিকা জরিপ করেছে, দেশের মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্র্বাচন চায়। ৯০ শতাংশ মানুষ চাচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন।”
সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “কানাডিয়ান টেলিভিশন কয়েকদিন আগে শেখ হাসিনার একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলো। তারার দেখিয়েছে, তার পরিবার ও সরকারের লোকজন কীভাবে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে।
“তিনি (শেখ হাসিনা) নিজেই এই সাক্ষাৎকারে বলেছেন. তার পরিবারের কেউ দুর্নীতিতে জড়িত ছিলো না। এ যেন ঠাকুরঘরে কে, আমি কলা খাই না।”
“শেখ হাসিনা কিছুদিন আগে পার্লামেন্টে একটি আনপার্লামেন্টারি কথা বলেছিলেন, ডাল মে কুচ কালা হ্যায়। এখন আমরাও বলছি, ডাল মে কুচ কালা হ্যায়।”
“আমাদের বসে থাকার সময় আর নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন যেন হয়, এই জন্য যার যার অবস্থান থেকে সবাইকে সক্রিয় হতে হবে।”
দেশের চিত্র যুক্তরাজ্যের রাজনীতিকদের জানানোর পরামর্শ দিয়ে তারেক বলেন, “আপনাদের প্রত্যেকে প্রত্যেকের এলাকায় যিনি এমপি আছেন, তাকে জানান। অন্য যারা পলিটিশিয়ান আছেন, তাদেরও জানান।”
দীর্ঘ বক্তব্যের এক পর্যায়ে হাঁফিয়ে ওঠেন তারেক। “শরীরটা আগের মতো ভালো নেই তো”, তিনি একথা বললে সমাবেশে অংশ নেয়া নেতারা তাকে বসেই বক্তব্য দিতে বলেন।
২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর গ্রেপ্তার তারেক পরের বছর জামিনে মুক্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান। ডজন খানেক মামলার আসামি তারেক এরপর আর দেশে ফেরেননি।