বঙ্গোপসাগরের আকাশ থেকে নিখোঁজ ভারতের সামরিক পরিবহন উড়োজাহাজ এএন-৩২ থেকে কোনো সিগন্যাল যুক্তরাষ্ট্রের স্যাটেলাইটগুলো রেকর্ড করেছে কিনা তা পরীক্ষা করতে দেশটির কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে ভারত।
Published : 30 Jul 2016, 03:28 PM
এনডিটিভি বলছে, শুক্রবার ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর দেশটির পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় এ কথা জানিয়েছেন।
উড়োজাহাজ নিখোঁজের ঘটনায় নাশকতার সম্ভাবনা খুব কম বলে এ সময় উল্লেখ করেন তিনি।
উড়োজাহাজটির এই হঠাৎ নিখোঁজ হওয়াতে বিশেষজ্ঞরা পর্যন্ত ‘বিভ্রান্ত’ বোধ করছেন এবং তিনি নিজেও ‘উৎকণ্ঠার’ মধ্যে আছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, “এ ধরনের হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায় আমি নিজেও উৎকণ্ঠার মধ্যে আছি। আমি অনেক বিমানবাহিনী প্রধান, বিমান বাহিনীর অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেছি, তারা সবাই এই হঠাৎ নিখোঁজে বিভ্রান্তবোধ করছেন।”
নিখোঁজ উড়োজাহাজটির ‘পর্যাপ্ত মেয়াদ’ ছিল জানিয়ে তিনি আরো বলেন, দুর্ঘটনা এড়াতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নেওয়া হচ্ছে এবং যে উড়োজাহাজগুলো উড়ার উপযুক্ত থাকবে না সেগুলো উড়বে না।”
তিনি বলেন, “উড়োজাহাজটি প্রায় রাডারের বাইরে চলে গিয়েছিল। আর মাত্র ১০ মিনিট উড়লেই সেটি পুরোপুরি রাডারের বাইরে চলে যেত আর পরবর্তী ১৫০ থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল কোনো রাডারের আওতার মধ্যে নেই, চেন্নাই বা পোর্ট ব্লেয়ার কোনো জায়গা থেকেই নয়।”
তিনি জানান, উড়োজাহাজটিকে প্রথমবারের মতো মেরামত করা হয়েছিল আর তারপর থেকে ১৭৯ ঘণ্টা উড়েছে এটি। উড়োজাহাজটির পাইলটের এই রুটে ৫০০ ঘণ্টা ওড়ার অভিজ্ঞতা ছিল।
“তবে এটি এমন নয় যে নতুন কিছু ঘটেছে,” বলেন তিনি।
“রেকর্ডে যা এসেছে তা হল, কুমুলোনিম্বাস মেঘের কারণে পাইলট ডান দিকে মোড় নেওয়ার কথা জানান। এ ধরনের মেঘ অত্যন্ত চার্জযুক্ত ও ভারী হওয়ার কারণে কোনো চালক এর মধ্যে প্রবেশ করতে চাইবেন না।”
তিনি জানান, রাডার থেকে হারিয়ে যাওয়া সাত-আট মিনিট আগে এ ঘটনা ঘটে।
“নিচে নামার সময় প্রকৃতপক্ষে এটি নিম্নমুখী হয়ে বামদিক ধরে নামতে শুরু করে এবং ২৩ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে খুব দ্রুত নামতে থাকে, এরপর এটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।” বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, “দুটি জিনিস হয়েছে, এটি রাডার সিগন্যালের একবারে প্রান্তে ছিল যেখান থেকে খুব জোরালো রাডার সিগন্যাল পাওয়া যায় না, শুধু এটিকে অনুসরণ করা যায়। এরপর এটি থেকে কোনো এসওএস আসেনি, কোনো ফ্রিকোয়েন্সি থেকে কোনো ট্রান্সমিশন হয়নি, হঠাৎ করেই এটি হারিয়ে যায়। এই বিষয়টিই উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো।”
উড়োজাহাজটির ইমার্জেন্সি বেকন লোকেটর থেকেও কোনো সঙ্কেত পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। যদি উড়োজাহাজটি পানিতে গোত্তা খেয়ে পড়ে যায়, তাহলে বেকন লোকেটরটি আসলে সক্রিয় হয়ে উঠেছে কিনা তা নির্ধারণ করাও ‘কঠিন’ বলে জানিয়েছেন তিনি।
“এর আগে উপকূলরক্ষীদের একটি ঘটনায়ও লোকেটর সক্রিয় হয়নি,” যোগ করেন তিনি।
এ ঘটনায় নাশকতার সম্ভাবনা খুব কম বলে দাবি করেন ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী।