জিকার সঙ্গে মাইক্রোসেফালির যোগ থাকার যে ধারণা করা হচ্ছিল, গবেষণার মধ্য দিয়ে তা-ই অনেকটা স্পষ্ট হয়েছে।
Published : 18 Feb 2016, 09:07 PM
ব্রাজিলে গর্ভবতী নারীদের উপর চালানো গবেষণায় জিকা ভাইরাসের সঙ্গে ছোট মাথার শিশু জন্মগ্রহণের যোগ থাকার ধারণাটিই স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়েছে বলে দাবি গবেষকদের।
গবেষকরা দুই নারী যাদের গর্ভকালীন সময়ে শরীরে জিকা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা গিয়েছিল, তাদের ‘অ্যামনিওটিক ফ্লু্ইডে’ ভাইরাসটির উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন।
ব্রাজিলের বিশেষজ্ঞরা বলেন, এর অর্থ জিকা ভাইরাস গর্ভে থাকা ভ্রূণকেও সংক্রমিত করতে পারে।
গবেষণা প্রতিবেদনটি ল্যানসেট ইনফেকশাস ডিজিজ জার্নালে প্রকাশ পায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষণায় অংশ নেওয়া দুই নারীর গর্ভকালে জ্বর, র্যাশ ও মাংসপেশীতে ব্যাথা হয়েছিল।
পরে আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যানে ধরা পড়ে, তাদের গর্ভে থাকা শিশু মাইক্রোসেফালিতে আক্রান্ত। এরপর গবেষকরা তাদের অ্যামনিওটিক ফ্লু্ইড পরীক্ষা করেন।বিজ্ঞানীরা গর্ভে ভ্রূণের চারপাশে থাকা ফ্লুইডের অল্প কিছু নমুনা নিয়ে পরীক্ষার পর সেগুলোতে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন।
প্রধান গবেষক ড. আনা দে ফিলিপিস বলেন, “এ গবেষণা প্রতিবেদনে একজন নারীর গর্ভকালীন অ্যামনিওটিক ফ্লুইডে সরাসরি জিকা ভাইরাসের উপস্থিতির বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ভাইরাসটি প্লাসেন্টার বাধা অতিক্রম করতে পারে এবং ভ্রূণকে সংক্রমিত করে।”
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, বিষয়টি এখনও প্রমাণিত নয়। বরং তারা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে আরও তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
গবেষক আনা দে ফিলিপসও অবশ্য বলেছেন, “জিকা ভাইরাসের কারণেই ওই দুই গর্ভবতী নারীর অনাগত শিশু মাইক্রোসেফালিতে আক্রান্ত হয়েছে কি-না তা এ গবেষণা থেকে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।”
তিনি বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা জিকা ও মাইক্রোসেফালির জৈবিক প্রক্রিয়া বুঝতে সক্ষম হব ততক্ষণ পর্যন্ত সুনিশ্চিতভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়। জরুরি ভিত্তিতে এ বিষয়ে পরবর্তী গবেষণা করা প্রয়োজন।”
ছোট মাথা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করা শিশুদের চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ‘মাইক্রোসেফালি’ বলে। মাইক্রোসেফালিতে আক্রান্ত শিশুর মস্তিষ্ক গঠন সম্পূর্ণরূপে হয় না। ফলে এইসব শিশুরা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী, শারীরিক প্রতিবন্ধী এমনকি তাদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
সম্প্রতি ব্রাজিলে মাইক্রোসেফালিতে আক্রান্ত শিশু জন্মের হার আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। গত বছর মে মাসে দেশটিতে জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হয়।