ছয় বছর আগে ইউটিউবে ভাইরাল হয়ে যাওয়া এক ভিডিওর কারণে বনেছিলেন সবার হাসির পাত্র। পাকিস্তানি সাংবাদিক চান্দ নওয়াব আজ সেই ভিডিওর কারণেই হয়ে গেলেন বিখ্যাত। তার সেই ভিডিওচিত্রের হুবুহু নকল করে এবং তার নামটি ধার নিয়েই যে গড়ে উঠেছে সালমান খান অভিনীত সুপারহিট সিনেমা ‘বাজরাঙ্গি ভাইজান’-এ অভিনেতা নাওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকির চরিত্র।
Published : 21 Jul 2015, 09:26 PM
ভারতের পাশাপাশি পাকিস্তানেও মুক্তি পেয়েই দারুন ব্যবসা করছে ‘বাজরাঙ্গি ভাইজান’। সিনেমাটি গড়ে উঠেছে পাকিস্তান থেকে ভারতে এসে হারিয়ে যাওয়া এক মূক শিশুর গল্প নিয়ে; মুন্নি নামের শিশুটিকে পাকিস্তানে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযানে নামে সালমান অভিনীত চরিত্রটি। আর পাকিস্তানে তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসে চান্দ নওয়াব নামের এক সাংবাদিক। এই চরিত্রেই অভিনয় করেছেন নাওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি।
সিনেমার একটি দৃশ্যে চান্দ নওয়াবের মতোই রেল স্টেশনে দাঁড়িয়ে ঈদের ছুটিতে পাকিস্তানিদের ঘরে ফেরার রিপোর্ট করতে দেখা যায় নাওয়াজ উদ্দিন সিদ্দিকিকে। আর এই দৃশ্যই পাকিস্তানে খ্যাতির চূড়ায় পৌঁছে দিয়েছে সত্যিকারের চান্দ নওয়াবকে।
হিন্দুস্তান টাইমসকে এ ব্যাপারে চান্দ জানান, “পাকিস্তানে মুক্তির প্রথম দিনই আমি সিনেমাটি দেখেছি। এবং যেভাবে নাওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি ‘বাজরাঙ্গি ভাইজান’-এ আমাকে ফুটিয়ে তুলেছেন, তাতে আমি দারুণ খুশি।”
পাকিস্তানে সিনেমাটি নিয়ে দর্শকদের উন্মাদনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জানেন, ২৭ জুলাই পর্যন্ত অাগাম বুকিং দিয়ে রাখা হয়েছে সিনেমাটির সব টিকেট? করাচিতে মানুষ দিনে সিনেমাটির চারটি শো-এর একটির জন্যও টিকেট পাচ্ছে না। আর অনেকেই আমাকে ফোন করে জানাচ্ছেন, সিনেমায় আমার থেকে অনুপ্রাণিত চরিত্রটি তাদের কতোটা ভাল লেগেছে।”
চান্দ নওয়াব আরও বলেন, “আমি পরিচালক কাবির খান, সালমান খান এবং নাওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই যেভাবে তারা আমাকে এবং পাকিস্তানকে তুলে ধরেছেন- সেজন্য। নাওয়াজউদ্দিন খুবই ভাল কাজ করেছেন।”
‘বাজরাঙ্গি ভাইজান’-এর বদৌলতে পাওয়া খ্যাতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “একটি টিভি অনুষ্ঠানে কাবির খানের সঙ্গে অংশ নিয়েছিলাম আমি। সেখানে তিনি বলেছেন, আমার মুম্বাইয়ে এসে সিনেমায় কাজ করা উচিৎ।”
এমনকি নিজের দেশেও এখন বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হওয়ার জন্য ডাক পাচ্ছেন চান্দ নওয়াব।
“এমন অনেক প্রস্তাব আসছে। দেখা যাক কি করা যায়।”
শুধু তাই নয়, নওয়াবের পরিচিতজনদের কাছেও এই সিনেমার পর তার কদর বেড়ে গেছে অনেক বেশি।
“অন্যরা আমার জন্য কেক এবং মিষ্টি নিয়ে দেখা করতে আসছেন। আমার বন্ধু এবং সহকর্মীরাও আমাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।”
ছয় বছর আগের ভাইরাল হয়ে যাওয়া ভিডিওটিতে দেখা যায়, করাচি থেকে সিন্ধ প্রদেশে ঈদের ছুটিতে ঘর ফিরতি মানুষের উপর প্রতিবেদন করতে গিয়ে ক্যামেরার সামনে বারবার খেই হারিয়ে ফেলছেন চান্দ নওয়াব। আর ক্যামেরার সামনে এসে পড়া মানুষের কারণেও বারবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল তার সংবাদ পরিবেশন। এর ফলে একই বাক্য কমপক্ষে বিশবার বলতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি।
সহকর্মীদের দুষ্টুমি করে ছড়িয়ে দেওয়া এই ভিডিওর কারণে সবার হাসির পাত্র হওয়ায় প্রথম দিকে বেশ বিরক্ত হয়েছিলেন চান্দ নওয়াব।
“কয়েক বছর আগে আমি ইরানে গিয়েছিলাম। সেখানে কিছু ভারতীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর বলেছিলাম, দেখুন, এই ভিডিটির কারণে কেবল পাকিস্তানেই নয় ভারতেও আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। মানুষ তখন এই ভিডিও দেখিয়ে বলতো, দেখ, পাকিস্তানি সাংবাদিকতার নমুনা।”
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে তার। কারণ এই ভিডিওর কারণেই জনপ্রিয় হয়েছেন তিনি।