দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলে যুক্ত করতে ‘আঞ্চলিক সাবমেরিন টেলিযোগাযোগ’ নামে একটি প্রকল্পে অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
Published : 12 May 2015, 08:20 PM
এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আন্তর্জাতিক সাবমেরিন যোগাযোগ ব্যবস্থার বহুমুখীকরণ, দেশের অতিরিক্ত ব্যান্ডউইডথ (ডাটা ও ভয়েসের ক্ষেত্রে) চাহিদা পূরণের পাশাপাশি সফটওয়্যার রপ্তানি, ডাটা এন্ট্রি ও ফ্রি-ল্যান্সিংসহ সার্বিক তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে উন্নত সেবা নিশ্চিত হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে প্রায় ৬৬০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই প্রকল্পসহ দুই হাজার ৩৬৫ কোটি টাকার মোট ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।
এসব প্রকল্পে ব্যয়ের এক হাজার ৫৩১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা আসবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এবং ৬৮১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা প্রকল্প সাহায্য থেকে। বাদবাকি ১৫২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল সংযোগ প্রকল্পের এর ফলে ক্রমবর্ধমান ব্যান্ডউইডথ চাহিদা মিটিয়ে কেবল সংযোগ নিরবচ্ছিন্ন রাখা যাবে।
মন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে কক্সবাজারে অবস্থিত প্রথম সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে বাংলাদেশ তথ্য প্রযুক্তির মহাসড়কে রয়েছে। প্রথম কেবলটি কোন কারণে কাটা পড়লে তা ঠিক করতে ৭ থেকে ১০দিন পর্য়ন্ত লেগে যেতে পারে। ওই কদিন পুরো দেশ তথ্য প্রযুক্তির বাইরে থাকবে। তাই এর বিকল্প হিসেবে দ্বিতীয় সাবমেরিন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হলো।”
তিনি জানান, নতুন সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে আরও ১৩০০ জিপিএস ব্যান্ডউইথ পাওয়া যাবে। প্রথম সাবমেরিন কেবলের চেয়ে নতুন কেবলটি দশগুণ বেশি শক্তিশালী। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটায় এ সাবমেরিন কেবল সংযোগের গ্রাউন্ড লোকেশন ঠিক করা হয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রী আরও বলেন, এ প্রকল্পের ফলে ডাটা ও ভয়েসের ক্ষেত্রে দেশের ব্যান্ডউইথ চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সরবরাহ বাড়বে। ফলে দেশে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া যাবে।
সভায় অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, ২৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘বিসিক শিল্প নগরী, মিরসরাই’ প্রকল্প।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৮৮টি শিল্প প্লট উন্নয়ন করে উদ্যোক্তাদের মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হবে। এতে ১০ শতাংশ প্লট মহিলা উদ্যোক্তার জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
এছাড়া ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ শহরের পানি সরবরাহ ব্যবস্থা আরও উন্নত করতে ২৫২ কোটি টাকায় বাস্তবায়ন করা হবে ‘অন্তবর্তীকালীন পানি সরবরাহ প্রকল্প’।
প্রায় ৪১৪ কোটি টাকায় বাস্তবায়ন করা হবে ‘পানি সরবরাহ স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যশিক্ষা’ প্রকল্প। এতে ইউনিসেফ ৩২৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকার অনুদান দেবে। ২৮ জেলার ৪০ উপজেলা ও ১৫টি সিটি করপোরেশনে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
সভায় প্রায় ৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘দিনাজপুর- বিরল-পাকুরা- রাধিকাপুর-(বিরল স্থল বন্দর)’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।
এছাড়া ৩৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকায় বাস্তবায়ন করা হবে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিদ্যালয়ে কৃষি অর্থনীতি ও পল্লী উন্নয়ন অনুষদের ভৌত ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি প্রকল্প’ অনুমোদন পেয়েছে।
এর বাইরে অনুমোদন পাওয়া ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক গাজীপুর’ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, ২৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘জাতীয় জুনিং প্রকল্প (২য় পর্যায়)’ প্রকল্প, ২৩১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘বিএডিসির বিদ্যমান বীজ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিতরণ ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ এবং উন্নয়ন’ প্রকল্প।