গ্যাসের দাম বৃদ্ধি এলএনজির দাম সমন্বয়ে: প্রতিমন্ত্রী

গৃহস্থালিতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে এলএনজির দামের সঙ্গে সমন্বয়ের কথা বলেছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 March 2017, 11:00 AM
Updated : 5 March 2017, 11:00 AM

সেই সঙ্গে ভর্তুকির চাপ কমানোও এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ বলে রোববার ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি ইফিসিয়েন্সি ডে’ উপলক্ষে মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে বলেছেন তিনি।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গৃহস্থালিতে ও গাড়িতে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বাড়ায়।

আবাসিক গ্রাহকদের আগামী ১ মার্চ থেকে এক চুলার জন্য মাসে ৭৫০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৮০০ টাকা দিতে হবে। আর দ্বিতীয় ধাপে ১ জুন থেকে এক চুলার জন্য মাসিক বিল ৯০০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৯৫০ টাকা হবে।

পাশাপাশি যানবাহনে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাসের (সিএনজি) দাম ১ মার্চ থেকে প্রতি ঘনমিটারে ৩৮ টাকা এবং ১ জুন থেকে ৪০ টাকা হবে।

পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদন, সার, শিল্প ও বাণিজ্যক খাতেও গ্যাসের দাম দুই ধাপে ৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বিইআরসি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “গ্যাসে একটা বিশাল জায়গাতে সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে গিয়ে দাম বাড়াতে হয়েছে। যদিও সমস্যাগুলো সাধারণ জনগণের ওপরই বর্তায়।”

আরেক কারণের বিষয়ে তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে যে এলএনজি আসবে সেটার প্রাইস কিন্তু অনেক বেশি। সেটার মূল্য এডজাস্টমেন্টের জন্য আমাদেরকে গ্যাসের দাম বাড়াতে হয়েছে।

“বিদ্যুৎ এবং কারখানায় যারা বড় গ্রাহক তাদেরকে আগে থেকেই বলে দিয়েছি যে, আপনাদেরকে প্রস্তুতি নিতে হবে। আগামী দুই বছরের মধ্যে আপনারা নিরবিচ্ছিন্ন জ্বালানি পাবেন। তবে এলএনজি আসলে, এটা মিক্সড করলেও কিন্তু এটার মূল্যটা অনেক বেশি হবে।”

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও অভ্যন্তরীণ বাজারে তা কমায়নি সরকার।

এখন তা কমানো হবে কি না- এ প্রশ্নের উত্তরে নসরুল বলেন, “তেলের দাম কমানোর পর জনগণ তার সুফল পাচ্ছে কি না, সেটা দেখতে হবে। তেলের দাম কমবে গ্লোবাল মার্কেট একটু স্থিতিশীল হলে।

“এখন বিশ্ব বাজারটা বেশ উঠা-নামা করছে। এটা স্বাভাবিক হলে আমরা হয়ত একটা পদক্ষেপ নেব দামটা আরেকটু কমানোর জন্য।”

বঙ্গোপসাগরে গ্যাস অনুসন্ধানে নতুন করে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “আগামী কিছু দিনের মধ্যে কয়েকটি কোম্পানিকে গ্যাস অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হবে।

“খুব দ্রুততার সাথে গভীর সমুদ্রে মাল্টিপ্লান সার্ভে শুরু করতে চাচ্ছি। এর আগেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, কোনো কারণে প্রায় দুই বছর পিছিয়ে গেছি। এখন আবার চাচ্ছি যাতে সার্ভেটা শুরু করা হয়। ইতোমধ্যেই ১০৮টা ড্রিলিংয়ের জন্য টেন্ডার করে দিয়েছি, ইভাল্যুশন চলছে। আমরা অনশোরে চলে যাব কাজগুলো শুরু করার জন্য।”

ইতোমধ্যে মিয়ানমার সীমান্তে একটি কোম্পানিকে কাজ দেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

মন্ত্রণালয়ের হাইড্রোকার্বন ইউনিট ও আইপিএজি আলোচনা অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে তিন পর্বে তিনটি পৃথক শিরোনামে চলছে আলোচনা। প্রথম পর্বে ইন্টারন্যাশনাল বেস্ট প্রাক্টিস ইন এনার্জি ইফিসিয়েন্সি ইমপ্লিমেন্টেশন’ শিরোনামে আলোচনায় অংশ নেন আইপিএজির চেয়ারম্যান সাঈদ মুনির খসরু, বিদ্যুত বিভাগের যুগ্ম সচিব সিদ্দিক জোবায়েরসহ বেশ কয়েকজন।

এছাড়া বুয়েটের শিক্ষক অধ্যাপক মোহাম্মদ আরিফ হাসান মামুন, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর ফয়জুল্লাহ, পেট্রোবাংলার জিএম লুৎফুর রহমানসহ জ্বালানি সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।