চট্টগ্রামের চন্দনাইশের বরকল এস জেড উচ্চ বিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত মাঠে মার্কেট নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাই কোর্ট।
Published : 17 Jan 2017, 05:06 PM
এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের বেঞ্চ নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে রুলও জারি করে।
মার্কেট নির্মাণ করতে গিয়ে ভেঙে ফেলা স্কুলের সীমানা প্রাচীরকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।
মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ ১৬ জানুয়ারি এ রিট আবেদন করেন। আদালতে এর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আশরাফুল হাদী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।
রুলে মার্কেট নির্মাণে রোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চেয়ে রুল দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সরকার সচিব, পরিকল্পনা সচিব, শিক্ষা সচিব, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যাননহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আশরাফুল হাদী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একাত্তরে এই মাঠটি ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেইনিং গ্রাউন্ড। সংবিধানের ২৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ‘বিশেষ শৈল্পিক কিংবা ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন বা তাৎর্যমণ্ডিত স্মৃতিনিদর্শন, বস্তু বা স্থানসমূহকে বিকৃতি, বিনাশ বা অপসারণ হইতে রক্ষা করিবার জন্য রাষ্ট্র ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।’ ফলে কোনোভাবেই এ মাঠের আকার নষ্ট করে কোনো স্থাপনা গড়ে উঠতে পারে না।”
তাছাড়া স্কুল ও মাঠের ভূমির মালিক শিক্ষা বিভাগ হলেও তাদের অনুমতি ছাড়াই স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটি গত ডিসেম্বরে মার্কেট নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করে বলে জানান এই আইনজীবী।
“স্কুলের মাঠে মার্কেট গড়ে তোলার বিষয়ে যেখানে ব্যবস্থাপনা কমিটির আপত্তি থাকবে, তা না করে তারা উল্টো কাজটি করছে। তাছাড়া, স্কুলের সীমানা প্রাচীর ভাঙার ফলে স্কুলের শিক্ষার্থীদেরও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে।”
গত ৯ জানুয়ারি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অগ্রনায়ক মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী ১৯২৪ সালে নিজ গ্রামে এ স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ হয় এ বিদ্যালয়ের মাঠে। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে বিদ্যালয়ের এ মাঠেই মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র সমর্পণ করেন।