নায়েক আব্দুর রাজ্জাককে শর্তসাপেক্ষে ফিরিয়ে দিতে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিজিপি) রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি।
Published : 22 Jun 2015, 07:56 PM
শর্তটি হচ্ছে, অবৈধভাবে বিদেশ পাড়ি দিতে গিয়ে সাগর থেকে উদ্ধার ৫৫৫ জনকেও বিজিবি সদস্যের সঙ্গে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
এরা বাংলাদেশি বলে মিয়ানমার দাবি করলেও বাংলাদেশ সরকার যাচাই করে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার আগে কাউকে আনতে নারাজ। সপ্তাহখানেক আগে যাচাই করে দেড়শ জনকে আনার পরও তার মধ্যে রোহিঙ্গা ধরা পড়েছিল।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে গত ১৭ জুন কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে নাফ নদীতে গোলাগুলির পর বিজিবির নায়েক রাজ্জাককে ধরে নিয়ে যায় বিজিপি। তখন বিপ্লব নামে একজন বিজিবি সদস্য গুলিবিদ্ধও হন।
এরপর ঢাকায় মিয়ানমারের দূতকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি সদস্যকে ফেরতের পদক্ষেপ নিতে বলা হয় তাকে।
বিজিবির মাধ্যমে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে রাজ্জাককে ফেরত আনার চেষ্টা চলছে বলেও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের জানান।
বিজিবির টেকনাফ ৪২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুজার আল জাহিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সোমবার বিজিপির সঙ্গে তার তিন দফা আলোচনা হয়েছে। তারা রাজ্জাককে ফেরত দিতেও রাজি হয়েছে।
“তবে বিজিপির পক্ষ থেকে শর্ত দেওয়া হয়েছে, রাজ্জাকসহ মিয়ানমারের জলসীমায় দেশটির নৌ-বাহিনীর হাতে উদ্ধার ৭২৭ জনের মধ্যে ৫৫৫ জনকে ফিরিয়ে আনতে হবে।”
মিয়ানমার ওই ৫৫৫ জনকে বাংলাদেশি বলে দাবি করে আসছে। কিন্ত যাচাই-বাছাইয়ের আগে তাদের বাংলাদেশি হিসেবে গ্রহণে আপত্তির কথা আগে থেকে জানিয়ে আসছে বিজিবি।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাহিদ বলেন, “রাজ্জাক এবং উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের ইস্যুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। এরা বাংলাদেশি কি না বা কতজন প্রকৃত বাংলাদেশি, তা যাচাই-বাছাই করা একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া।”
আপাতত রাজ্জাককে ফেরত দিতে বিজিপিকে বলেছে বিজিবি।
“রাজ্জাককে দ্রুত ফেরত চেয়েছি। অভিবাসী ফেরতের বিষয়টি যাচাই-বাছাইয়ের পর সুরাহার সিদ্ধান্ত তাদের জানানো হবে।”
আটক রাজ্জাক কী অবস্থায় রয়েছেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানা যায়নি। তবে বিজিপির ফেইসবুক পেইজে তার দুটো ছবি প্রকাশ করা হয়েছে, যাতে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাতকড়া হাতে দেখা যায়।
ওই ছবি দেখার পর এই বিজিবি সদস্যকে নিয়ে নাটোরে তার পরিবার উদ্বিগ্ন। তাকে উদ্ধারে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনাও উঠেছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।