‘বিভ্রান্তিকর’ তালিকা দেখে মিয়ানমার যায়নি বিজিবি

সাগরে অবৈধ অভিবাসী নিয়ে সঙ্কটের মধ্যে উদ্ধার দুই শতাধিক ব্যক্তির পরিচয়ের বিস্তারিত না পাওয়ার কারণে মিয়ানমার যায়নি বিজিবির প্রতিনিধি দল।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2015, 02:05 PM
Updated : 24 May 2015, 02:34 PM

উদ্ধার ২০৮ জন বাংলাদেশের বলে মিয়ানমার দাবি করে এলেও দেশটি তাদের দেশের রোহিঙ্গাদেরও ‘বাঙালি’ হিসেবে চিহ্নিত করায় পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরই তাদের দেশে আনার ব্যবস্থা নিতে চায় বিজিবি।

এজন্য উদ্ধার নাগরিকদের বিস্তারিত তালিকা পাঠাতে মিয়ানমারকে ফের চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে বিজিবির কক্সবাজার সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল মো. খালেকুজ্জামান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

মালয়েশিয়া সীমান্তবর্তী থাইল্যান্ডের জঙ্গলে সম্প্রতি মানব পাচারকারীদের কয়েকটি আস্তানা ও কবরের সন্ধান মেলার পর অবৈধ অভিবাসী ঠেকাতে কড়া পদক্ষেপ নেয় ইন্দোনেশিয়াসহ এই তিনটি দেশ।

ফলে অবৈধ অভিবাসীবাহী ট্রলার বা নৌকাগুলো কূলে ভিড়তে পারছিল না। খাদ্য সঙ্কটে পড়ে নৌকায় নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে অনেকের মারা যাওয়ার খবরও আসে।

এর মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া কিছুটা নমনীয় হয়ে ভাসমান ট্রলারে আটকেপড়াদের উদ্ধার করতে রাজি হয়।

মিয়ানমারও বৃহস্পতিবার ২০৮ জনকে উদ্ধার করে বলে যে এরা বাংলাদেশি। তাদের নৌবাহিনীর হেফাজতে থাকা এদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানায় তারা।

মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সঙ্গে আলোচনার পর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ১১ সদস্যের একটি দল রোববার প্রতিবেশী দেশটিতে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়।

সকাল সাড়ে ৯টা থেকে টেকনাফ স্থল বন্দরের জেটিঘাটে অপেক্ষা করতে থাকে বিজিবির প্রতিনিধি দল, যার নেতৃত্বে ছিলেন কর্নেল খালেকুজ্জামান। কিন্তু চাওয়া অনুযায়ী মিয়ানমারের কাছে পূর্ণাঙ্গ তথ্য সম্বলিত তালিকা না আসায় তারা আর রওনা হননি।  

বিজিবি সেক্টর কমান্ডার খালেকুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, “রওনা হওয়ার আগে বিজিপির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা ২০০ জনের একটি তালিকা পাঠায়।

“পাঠানো তালিকাটি বিভ্রান্তিকর ও অসম্পূর্ণ। যেসব লোকজনের তালিকা পাঠানো হয়েছে, তাতে শুধু ব্যক্তির নাম ও জেলার নাম রয়েছে।”

এই তালিকাটি বিজিবি সদর দপ্তরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। বিজিপির কাছে পূর্ণাঙ্গ তথ্য সম্বলিত (নাম, পিতা-মাতার নাম, বয়স ও ঠিকানা) তালিকা চেয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে।

“ওই তালিকাটি বিজিবির হাতে এলে যাচাই-বাছাই শেষে প্রকৃত বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত আনা হবে,” বলা হয়েছে ওই চিঠিতে।

মিয়ানমারে নিপীড়নের স্বীকার মুসলিম রোহিঙ্গাদের ৫ লাখের বেশি বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে দুই যুগের বেশি সময় ধরে। তাদের ফেরাতে বাংলাদেশ বারবার আহ্বান জানিয়ে এলেও তাতে সাড়া দেয়নি মিয়ানমার।

এই বিপুল সংখ্যক বিদেশির ভারবহন করে আসা বাংলাদেশ সরকার নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধে তৎপর।