মানব পাচারের শিকার হয়ে এখন আন্দামান সাগরে আটকেপড়া মানুষদের অধিকাংশই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
Published : 21 May 2015, 05:20 PM
থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় ঢুকতে না পেরে আন্দামান সাগরে বিভিন্ন নৌকা বা ট্রলারে ভাসছেন অনেকে, যারা মিয়ানমার ও বাংলাদেশের নাগরিক বলে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার মধ্যে প্রতিমন্ত্রী বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “যারা জাহাজে আটকা পড়েছে, তারা বাংলা ভাষায় কথা বলে ঠিকই, অনেকে বাংলাদেশি বলছে, তাও ঠিক।
“আমাদের দেশের ইয়ং ছেলেপেলেরা কাজের জন্য ভাগ্যান্বেষণে যেতে পারে, কিন্তু এই যে মহিলা ও বাচ্চা-বৃদ্ধরা গিয়েছে, তাদের বেশভূষা দেখবেন, তা দেখলে স্পষ্ট হয় বেশিরভাগ রোহিঙ্গা।”
মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গাদের পাঁচ লাখের বেশি বাংলাদেশের আশ্রয়ে রয়েছে। এই রোহিঙ্গারা বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে বলে বাংলাদেশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে মানব পাচারে বাংলাদেশের কক্সবাজার উপকূল ব্যবহারের খবর গণমাধ্যমে এসেছে। বাংলাদেশিদের অনেকে এভাবে মালয়েশিয়া পাড়ি জমাতে গিয়ে সাগরে আটকে পড়েছেন বলেও খবর বেরিয়েছে।
মালয়েশিয়া সীমান্তবর্তী থাইল্যান্ডের জঙ্গলে সম্প্রতি মানব পাচারকারীদের কয়েকটি আস্তানা ও কবরের সন্ধান মেলার পর অবৈধ অভিবাসী ঠেকাতে কড়া পদক্ষেপ নেয় তিন দেশ।
ফলে অবৈধ অভিবাসীবাহী ট্রলার বা নৌকাগুলো কূলে ভিড়তে পারছে না। খাদ্য সঙ্কটে পড়ে নৌকায় নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে অনেকের মারা যাওয়ার খবরও আসছে।
আন্দামান সাগরে আটকেপড়াদের উদ্ধারে বিভিন্ন সংগঠনের দাবির প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত সংলাপে এই নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই বিষয়ে তার মন্ত্রণালয়ের করার কিছু নেই।
“এরা ইন্দোনেশিয়া, খাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার জলসীমায় রয়েছে। আমাদের জলসীমায় এদের অবস্থান নেই। আমাদের জলসীমায় যে ১১৪ জন ছিল, তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
তবে পররাষ্ট্র ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে আটকেপড়াদের ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
“যদি থাইল্যান্ড গভর্নমেন্ট বা অন্য কোনো দেশ পার্মিশন দেয়, যদি বলে তোমাদের লোক তোমাদের কাছে নিয়ে যাও, আমাদের নেভি আমাদের কোস্ট গার্ড রয়েছে, যেভাবে পারি আমরা নিয়ে আসব।”
মানব পাচার ঠেকাতে তিন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ চলছে বলে জানান আসাদুজ্জামান কামাল।
সাগরে মাছ ধরার নৌকার জন্য নিবন্ধন এবং জেলেদের পরিচয়পত্র দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “তাহলে সহজেই ধরা যাবে, কারা একাজ (মানব পাচার) করছে।”