উচ্চ শিক্ষার মান নিয়ে যেন প্রশ্ন না উঠে: রাষ্ট্রপতি

কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নিয়ে সমালোচনার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে (ইউজিসি) ব্যবস্থা নিতে বলেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

একই সঙ্গে যারা শিক্ষাকে পণ্য হিসেবে বাণিজ্য করতে চায় তাদেরকে অন্য খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

রোববার ‘৭ম ইউজিসি অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে’ রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।

আবদুল হামিদ বলেন, “আজকাল কিছু কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঙ্ক্ষিত মান অর্জন নিয়ে সুধী মহলে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। উচ্চশিক্ষার সকল পর্যায়ে শিক্ষার মান নিয়ে যাতে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।

“আমাদের মনে রাখতে হবে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কখনোই বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয় এবং তা হওয়া কাম্যও নয়। যারা শিক্ষাকে পণ্য হিসাবে বাণিজ্য করতে চায়, তাদের উচিৎ হবে শিক্ষা বাদে অন্য কোনো খাতে বিনিয়োগ করা। তাতে দেশ ও জাতি উভয়ই উপকৃত হবে।”

তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থী বৃদ্ধির সাথে সাথে উচ্চশিক্ষার মান নিশ্চিতকরণ এবং এর ক্রমাগত উন্নয়ন আমাদের সামনে এক বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কী কী কর্মপরিকল্পনা নেয়া যেতে পারে তা ভাবনার সময় হয়েছে।

“আমি আশা করবো ইউজিসি এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাবে।”

গবেষণাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, “জ্ঞানের প্রজ্জ্বলিত শিখা যেমন তরুণ প্রজন্মকে উৎসাহিত করে তেমনি গবেষণার মাধ্যমে সৃষ্টি হয় নবতর জ্ঞানের, যা সমাজকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়। এ জন্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার গুণগতমান বজায় রাখার পাশাপাশি গবেষণা অত্যন্ত জরুরি। আমার বিশ্বাস সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিবেন।”

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ জন শিক্ষকদের হাতে ইউজিসি অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তরা হলেন, তাসলিমা ইয়াসমিন (সহাকারী অধ্যাপক আইন বিভাগ, ঢাবি), মো. মিজানুর রহমান খান (অধ্যাপক, রসায়ন বিভাগ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট), মো. ইউনুস আলী (অধ্যাপক, কম্পিউটার বিজ্ঞান, বুয়েট), মো. শাহ আলম (অধ্যাপক, ইলেট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং, বুয়েট),জামিলা এ চৌধুরী (সহযোগী অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ঢাবি), এম. হাবিবুর রহমান (অধ্যাপক, পুরকৌশল বিভাগ, বুয়েট), আমজাদ হোসেন (অধ্যাপক ইতিহাস বিভাগ, ঢা.বি),মো. নান্নু মিয়া (সহকারী অধ্যাপক, আইন বিভাগ, উত্তরা ইউনিভার্সিটি), মো. জিয়াউল হক মামুন (অধ্যাপক আইবিএ, ঢাবি), আবুল হাসনাত (অধ্যাপক, ফার্মেসি অ্যান্ড ফার্মাকোলজি বিভাগ, ঢাবি), মো. শাহজালাল (সহযোগী অধ্যাপক, মৎস ব্যবস্থাপনা বিভাগ, বাকৃবি), আবু বিন হাসান সুশান (অধ্যাপক, রসায়স বিভাগ, ঢা.বি), তপন কুমার সাহা (অধ্যাপক, রসায়ন বিভাগ, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়), তানভীর ফেরদৌস (সহকারী অধ্যাপক, পুরকৌশল বিভাগ, আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়), নাজমা শাহীন (অধ্যাপক, পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান, ঢাবি), এ বি এম আবদুল্লাহ (অধ্যাপক ও ডিন মেডিসিন অনুষদ, বিএসএমএমইউ)।

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউজিসি চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরী।

আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নাজমা শাহীন, বিএসএমএমইউয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন এ বি এম আবদুল্লাহ।