মোতালেবের ৬ সন্তানকে নিয়ে দুর্ভাবনায় পরিবার

বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি ফেরার কথা স্ত্রী লাকি আক্তারকে ফোনে জানিয়েছিলেন আব্দুল মোতালেব।

মিঠুন চৌধুরীমিঠুন চৌধুরী চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2015, 02:06 PM
Updated : 29 Jan 2015, 02:14 PM

তার আগেই বুধবার রাতে না ফেরার দেশে চলে যাওয়া মোতালেবের লাশের অপেক্ষায় এখন তার পরিবারের সদস্যরা।

বুধবার রাত ১১টার দিকে চাঁদপুর সদর উপজেলার ঘোষেরহাট এলাকার চাঁদপুর-কুমিল্লা সড়কে ট্রাকে অবরোধকারীরা পেট্রোলবোমা ছোড়ে তাই মোতালেবের মৃত্যুর কারণ হয়।

আগুনে পুড়ে মরা থেকে বাঁচতে লাফিয়ে পড়ে চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে মারা যান ওই ট্রাকেরই হেলপার ৪৫ বছর বয়সী মোতালেব।

চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর সরাইপাড়াতে মোতালেবের বাড়ি। আট সদস্যের পরিবারের কর্তা একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুর পর এখন চরম অনিশ্চয়তায় তার পরিবারের সদস্যরা।

মোতালেবের ছোট ভাই আবদুল জলিল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার ভাইয়ের ছয় ছেলে-মেয়ে। তিন মেয়ে স্কুলে যায়। তিন ছেলে ছোট।

“আমার ভাবি কিছু করেন না। ভাইয়ের একার আয়েই সংসার চলত। এখন পরিবারটা কিভাবে চলবে? আমরা কিছু বুঝতে পারছি না। আপনারা একটু দেখেন। সরকার কিছু না করলে পরিবারটা ভেসে যাবে।”

নিহত মোতালেবের তিন মেয়ে আঁখি সপ্তম শ্রেণি, লিপা দ্বিতীয় শ্রেণি আর রেখা প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তিন ছেলে আকিব (৭), আবিদ (৪) ও মিরাজ (১)।

জলিল বলেন, “গতকাল (বুধবার) বিকালে ভাবির সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয় ভাইয়ার। উনি বলেছিলেন আজ ভোরের দিকে বাড়ি চলে আসবেন।

“মঙ্গলবার চট্টগ্রাম থেকে গাড়ি নিয়ে ঢাকা যান বড় ভাই। সেখান থেকে চট্টগ্রাম চলে আসার কথা ছিল। পরে ঢাকা থেকে ভাড়া পেয়ে তারা চাঁদপুরের মতলবে যাচ্ছিল।“

নগরীর সরাইপাড়ার ১২ নম্বর ওয়ার্ড নাসিরাবাদ এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা মোতালেব।

আবদুল হাকিম ও আয়েশা বেগম দম্পতির চার ছেলে, দুই মেয়ের মধ্যে সবার বড় ছিলেন মোতালেব। হাকিমের ছেলেরা দুই তলা একটি ভবনে সবাই মিলে থাকে।

মোতালেব নিহত হওয়ার খবর পাওয়ার পর থেকেই বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তার স্ত্রী লাকি। সত্তরোর্ধ্ব হাকিম নাতি-নাতনিদের জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন।