আয়মান আল জাওয়াহিরি ও তার জঙ্গি দল আল কায়েদা তরুণদের ‘টার্গেট’ করে ‘মগজ ধোলাই’ চালাচ্ছে মন্তব্য করে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের একজন বিচারক।
Published : 13 Nov 2014, 01:16 PM
উগ্রপন্থি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য সন্দেহে গ্রেপ্তার মো. আসিফ আদনান (২৬) নামে এক যুবকের জামিনের বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী বৃহস্পতিবার এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে জঙ্গি ষড়যন্ত্র ও তৎপরতার যেসব তথ্য উঠে এসেছে, তা আশঙ্কা ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিষয়।
প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চে শুনানির পর আসিফ আদনানের জামিনের বিষয়ে আদেশের জন্য রোববার দিন রেখেছে আদালত। ওই সময় পর্যন্ত হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত করা হয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে ওই যুবককে গ্রেপ্তারের পর তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ। হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ গত সোমবার পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করা পর্যন্ত তাকে জামিন দেয়।
আদালতে আসিফের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ। আসিফের বাবা হাই কোর্টের সাবেক বিচারক ও আইনজীবী আব্দুস সালাম মামুনও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন ফকির ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী শুনানিতে বলেন, “আমরা যখন তরুণ ছিলাম তখন আদর্শ ছিল মার্কস, লেনিন, চে গুয়েভারা।... এখনকার তরুণরা কেউ কেউ জাওয়াহিরির উন্মাদনায়, কথায় বিভ্রান্ত হয়। তাকে অনুসরণ করে। শিক্ষিত, বিত্তবান পরিবারের সন্তান, এনএসইউ-ইংলিশ মিডিয়ামের ছেলেপেলেরা বিভ্রান্ত হয়।
“জাওয়াহিরি মগজ ধোলাই করছে। তরুণেরা এই ফাঁদে পা দিচ্ছে। জাওয়াহিরি উন্মাদ, তার উন্মাদনা তরুণদেরকে টার্গেট করেছে।”
একজন সাবেক বিচারকের ছেলের এভাবে আদালতে আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের ব্রাদারকে ছেলের বিষয়ে এখানে আসতে হয়েছে। আমাদের সত্যি খারাপ লাগছে। আমাদের রক্তক্ষরণ হচ্ছে।”
আসিফের পাশাপাশি আরেকজনকে গ্রেপ্তারের পরদিন ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছিলেন, “তারা সম্প্রতি প্রচারিত আল-কায়েদা নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরির ভিডিও বার্তায় অনুপ্রাণিত হয়ে তুরস্ক ও সিরিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। তারা কথিত জিহাদে অংশ নিয়ে দেশে ফিরে তাদের নিজস্ব মতবাদ প্রচার করতে চেয়েছিল।”
গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মাহমুদ নাসের জনি বলেছিলেন, “গ্রেপ্তাররা প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য। বাংলাদেশে আল-কায়েদা নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করতে তাদের এক সহযোগী যুক্তরাজ্য থেকে এসে এদেশে অবস্থান করছিল।”
আসিফের দেওয়া তথ্যে পরে ব্রিটিশ নাগরিক সামিউন রহমান ওরফে ইবনে হামদান নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। পুলিশ জানায়, সামিউন ‘মুজাহিদ’ সংগ্রহে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন।