দেশে ধনী-গরীবের বৈষম্য দূর করতে সমবায়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 01 Nov 2014, 01:42 PM
৪৩তম জাতীয় সমবায় দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ধনী-গরীবের বৈষম্য দূর করতে হলে গ্রামের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে হবে। গ্রামে অর্থের সঞ্চালন বাড়াতে হবে, কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে হবে। গ্রামের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতের ব্যবস্থা করতে হবে। এটা একমাত্র করতে পারে সমবায়।”
শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বলছিলেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “নদীভাঙনে অনেক মানুষ গৃহহারা হয়ে যায়। তারাও মানুষ। একদিকে আমরা দেখব বিশাল বিশাল অট্টালিকা। বিদেশ থেকে আনা ফার্নিচার আর ঝাড়বাতি, বিলাসবহুল জীবন যাপন। অন্যদিকে আমার দেশের মানুষ একটু মাথা গোঁজার ঠাই পাবে না। তাদেরকে রাস্তার পাড়ে বসে থাকতে হবে। রেললাইনের পাশে বস্তিতে থাকতে হবে। তাদেরকে মানবেতর জীবন যাপন করতে হবে কেন? এই বৈষম্য কেন থাকবে?”
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সফল সমবায়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখারও আহ্বান জানান। বক্তব্য শেষে তিনি দশটি ক্যাটাগরিতে ২০১২ সালের জাতীয় সমবায় পুরস্কার বিতরণ করেন।
এবার কৃষিভিত্তিক গ্রাম উন্নয়নে চাঁপাইনবাবগঞ্জের দ্বারিয়াপুর পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড, সঞ্চয় ঋণদানে ঢাকার সম্প্রীতি কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেডের সদস্য এমদাদ হোসেন মালিক, দুগ্ধ সমবায়ে পাবনার হাটুরিয়া জগন্নাথপুর প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি লিমিটেড, মহিলা সমবায়ে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেড, বহুমুখী সমবায়ে খুলনার দৌলতপুর বাজার বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড পুরস্কার পেয়েছে।
দেশে এখন এক লাখ ৯৪ হাজার সমবায় সমিতির ১ কোটি ২ লাখ সদস্য রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে ১৯৭২ সালের ৩০ জুন বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়ন আয়োজিত সমবায় সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বক্তব্য উদ্ধৃত করেন।
সেই অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, “আমার দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য পাবে, আশ্রয় পাবে, শিক্ষা পাবে, উন্নত জীবনের অধিকারী হবে- এই হচ্ছে আমার স্বপ্ন। এই পরিপ্রেক্ষিতে গণমুখী সমবায় আন্দোলনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ৬৪টি জেলার ৬৬টি উপজেলায় ‘সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচি’ প্রকল্পের আওতায় ৪,২৭৫টি গ্রামে গ্রাম সমবায় সমিতি গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলাকে এই কর্মসূর্চির আওতায় আনা হবে।
নারী ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, “নারী ক্ষমতায়নের কথা বললেই হবে না- তাদের আর্থিকভাবে সাবলম্বী করতে হবে।”
পারিবারিকভাবেও সমবায়ের মাধ্যমে পণ্য উৎপাদনের পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “এতে করে সম্পদ নিয়ে বিভেদ কমে যাবে। ঝগড়া-ঝাটি কমে যাবে।”
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এ কাদের সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মো. মসিউর রহমান রাঙ্গা এবং সমবায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মফিজুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।