নারায়ণগঞ্জে উপনির্বাচনে আচরণবিধি ভঙ্গের জন্য অভিযুক্তদের তালিকা থেকে দুই জনের নাম বাদ দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন সংশোধন করা হয়েছে।
Published : 22 Jul 2014, 07:39 PM
এরা হলেন- সহকারী পুলিশ সুপার মো. বশির উদ্দিন ও র্যাব কর্মকর্তা মেজর সোহেল।
নির্বাচনী তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান ও নারায়ণগঞ্জের যুগ্ম জেলা জজ হাবিবা মণ্ডল বলেছেন, ‘মুদ্রন ত্রুটির’ কারণে তদন্ত প্রতিবেদনে ওই দুজনের নাম উঠে এসেছিল।
গত সোমবার নির্বাচন কমিশনে এই সংশোধিত প্রতিবেদন পৌঁছায় বলে কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম জানান।
তিনি বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে আচরণবিধি ভঙ্গের জন্য অভিযুক্তদের তালিকায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান ও মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস সালামসহ চারজনের নাম ছিল। তবে নতুন প্রতিবেদনে দুই কর্মকর্তার নাম বাদ দেয়া হয়েছে।
ওই তদন্ত প্রতিবেদন কমিশন সভায় তোলা হবে জানিয়ে সচিব বলেন, “সার্বিক বিষয়ে ইসি সিদ্ধান্ত নেবে।”
ইসি সচিবের কাছে পাঠানো তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান হাবিবা মণ্ডলের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৬ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নির্বাচনপূর্ব অনিয়মের অভিযোগ নম্বর- ১০ এর তদন্ত প্রতিবেদন ৯ জুলাই পাঠানো হয়।
“এ প্রতিবেদনে মুদ্রন ত্রুটির কারণে অভিযুক্তের তালিকায় মেজর সোহেল ও এএসপি মো. বশিরউদ্দিনের নামও লিপিবদ্ধ হয়। প্রকৃতপক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো অভিযোগ নেই বা তদন্তও করা হয়নি।”
এদিকে তদন্তে শামীম ওসমান ও এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগের ‘সত্যতা’ মিললেও এ বিষয়ে আর কোনো ব্যবস্থা নাও নেয়া হতে পারে বলে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা মনে করছেন।
কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদন ওই আসনের ফল গেজেট আকারে প্রকাশের পরে পাঠানোয় তার কার্যকারিতা বস্ততপক্ষে নিষ্প্রয়োজন।
এক্ষেত্রে সাংসদ শামীম ওসমান ও ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার আর সুযোগ থাকছে না ইসির।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের ফল গেজেটে প্রকাশের পর গত ৮ জুলাই নির্বাচিত এ কে এম সেলিম ওসমান সাংসদ হিসেবে শপথ নিয়েছেন। তার পরদিনই তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছে নির্বাচন কমিশন।
সেলিম ওসমানের ভাই ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা পুলিশ কর্মকর্তা বশিরকে ‘অভিযুক্ত’ হিসেবে উল্লেখ করে প্রথমে তদন্ত প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়। সেখানে র্যাব-১১ এর মেজর সোহেলের নামও ছিল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসির একজন কর্মকর্তা বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে একদিকে বলা হয়েছে-ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে, অন্যদিকে বলা হয়েছে-আরো তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে।
আচরণবিধি ভঙ্গ হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে কোনো কিছু করা থেকে বিরত বা জরিমানার বিধান রয়েছে। অবশ্য তা গেজেট প্রকাশের আগে করা আইন সঙ্গত।
“বর্তমান ক্ষেত্রে কোনো আদেশ বা নিষেধ করা নিষ্প্রয়োজন। এক্ষেত্রে তার কার্যকারিতা রয়েছে বলে মনে হয় না,” বলেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, “ফলাফল গেজেটে প্রকাশের পর কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সঙ্গে এ প্রতিবেদনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তাছাড়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির কার্য্ক্রমকে অদক্ষ বলতেও আমি পারবো না।
“প্রতিবেদনটি পেয়েছি, এখন তা কমিশন সভায় উপস্থাপনের পর ইসি এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।”
তদন্ত প্রতিবেদনটি বৃহস্পতিবারের মধ্যে কমিশন সভায় উপস্থাপন হতে পারে বলে ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।