সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নিম্ন আদালতের বিচারকদের বিশেষ ‘সুবিধা’ দিয়ে সংশোধিত দুদক আইন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাতিলে সরকারকে উকিল নোটিস দিয়েছেন এক আইনজীবী।
Published : 23 Nov 2013, 11:52 AM
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ শনিবার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে জাতীয় সংসদের স্পিকার, আইন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের সচিব ও দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানকে এই নোটিস পাঠান।
নির্ধারিত ওই সময়ের মধ্যে আইনটি বাতিলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুসারে হাই কোর্টে রিট আবেদন করা হবে বলেও এতে জানানো হয়।
গত ১১ নভেম্বর ‘দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) বিল-২০১৩’ সংসদে পাস হয়। এতে বলা হয়, সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী, জজ ও ম্যাজিস্ট্রেটদের বিরুদ্ধে সরকারের অনুমোদন ছাড়া দুর্নীতির মামলা দায়ের করা যাবে না।
দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান এম বদিউজ্জামান আইন সংশোধনের সমালোচনা করেছেন। টিআইবিসহ বিভিন্ন নাগরকি সংগঠনও এর সমালোচনায় মুখর।
ইউনুস আলী বলেন, সংশোধিত আইন সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে বর্ণিত আইনের দৃষ্টিতে সমতার বিধান লঙ্ঘন করেছে। তাই সংবিধানের ২৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে মৌলিক অধিকারের অসামঞ্জস্য আইন হিসাবে এটা বাতিল হবে। ৭(২) অনুসারেও এই আইন বাতিল হয়ে যাবে।
নোটিসে বলা হয়, “বিশ্বের সর্বত্র রাষ্ট্রীয় লুটপাটে পাবলিক সার্ভেন্টদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা থাকে। তাই তাদের কাজের অধিকতর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সরকারি কাজ করলেই যদি সুরক্ষিত থাকেন, তাহলে বেসরকারি কাজ করলে অরক্ষিত থাকবে কেন? এই বৈষম্য চলতে পারে না।”
ইউনুস আলী বলেন, দেশের যে কোনো পর্যায়ে দুর্নীতির জন্য রাজনীতিবিদদের ঢালাওভাবে দায়ী করা হলেও প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যে দুর্নীতির জাল ছড়িয়ে আছে, তার মূলে রয়েছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
“ব্যুরোর (দুর্নীতি দমন ব্যুরো) আমলে এই ধরনের অনুমোদন প্রয়োজন হত। সেই অবস্থা থেকে বের হওয়ার জন্য কমিশন করা হল। এখন আইনের এই সংশোধনীর মাধ্যমে আবার আগের অবস্থায় ফিরে গেলাম আমরা।”
আইন সংশোধনের ফলে দুদককে একটি ‘নির্জীব’ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হল বলেও মন্তব্য করেন এই আইনজীবী।