ব্লু গোল্ড ম্যাকাও পাখি প্রিন্সকে প্রিন্সেসের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়ার নির্বাহী হাকিমের আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেছে ঢাকার একটি আদালত।
Published : 12 Feb 2013, 04:18 PM
প্রিন্সেসের পক্ষে রিভিশন আবেদনের শুনানি শেষে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জহুরুল হক এ আদেশ দেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ অবৈধ ঘোষণা করা হলেও প্রিন্সকে প্রিন্সেস ফেরত পাচ্ছে না। কারণ, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ প্রিন্সকে ফেরত দেয়ার ব্যাপারে আদেশে কোন কিছু বলেননি। ফলে প্রিন্সকে প্রিন্সেস আর ফেরত না পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
যেহেতু প্রিন্সকে তার প্রকৃত মালিকের কাছেই উদ্ধার করে দেওয়া হয়েছে তাই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ অবৈধ ঘোষণা করা হলেও প্রিন্সকে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে কোন আদেশ দেওয়া হয়নি।
প্রিন্সেসের পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, “যেহেতু নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে, তাই স্বভাবিকভাবেই প্রিন্সকে তার পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার কথা। আদেশ পাওয়ার পর আমরা এ ব্যাপারে কি করা যায় দেখব।”
অন্যদিকে প্রিন্সের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মনসুর রিপন জানান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ অবৈধ ঘোষণা করা হলেও যেহেতু পাখি ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে কোনো আদেশ দেয়া হয়নি, তাই প্রিন্সকে তারা আর ফেরত পাবেন না।
আদেশে বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধিতে কোনো অবরুদ্ধ ব্যক্তিকে উদ্ধারের জন্য তল্লাশি পরোয়ানা জারির বিধান রয়েছে। পাখি যেহেতু ব্যক্তির পর্যায়ে পড়ে না, তাই নির্বাহী হাকিম শাহে এলিদ মাঈনুল আমিনের পাখি উদ্ধারে তল্লাশি পরোয়ানা জারির আদেশ ছিল বেআইনি।
মহানগর দায়রা জজ রিভিশন মামলার শুনানির আগে উভয়পক্ষকে মিমাংসার তাগিদ দিলেও প্রিন্সের মালিক তাতে রাজী না হওয়ায় তা আর হয়নি।
এ সম্পর্কে প্রিন্সেসের আরেক আইনজীবী বরুন কুমার বিশ্বাস জানান, শুনানিকালে প্রিন্সেসের মালিক ডা. আবদুল ওয়াদুদ উপস্থিত ছিলেন।
সিঙ্গাপুর প্রবাসী মোহাম্মদ ইকরাম সেলিম ১৯৯৭ সালে সিঙ্গাপুর থেকে একটি ব্লু গোল্ড ম্যাকাও পাখি আনেন। তখন এর বয়স ছিল তিন মাস। ইস্কাটনের বাড়ি বিক্রি করে বারিধারায় চলে যায় সেলিমের পরিবার। ফলে তার পরিচিত হাতিরপুলের আবদুল ওয়াদুদের কাছে ২০১০ সালে পাখিটি লালন-পালনের অনুরোধ জানালে তিনি দায়িত্ব নেন।
আবদুল ওয়াদুদ প্রিন্সের জন্য পরপর দুটি সঙ্গী যোগাড় করেন।
কিন্তু দুটি সঙ্গীই পুরুষ হওয়ায় সারাক্ষণ মারামারি করে তারা মারা যায়। প্রিন্সের একাকীত্ব দূর করতে তৃতীয় যে সঙ্গী ম্যাকাওটি আনা হয় তা ছিল নারী। তার নাম রাখা হয় প্রিন্সেস। এটি চারটি বাচ্চা প্রসব করে।
হঠাৎ ইকরাম সেলিম প্রিন্সকে ফেরত চান। না দেয়ায় তাকে উদ্ধার করতে ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন তিনি। গত ১ জানুয়ারির আদালতের নির্দেশে গত ৩ জানুয়ারি কলাবাগান থানা প্রিন্সকে উদ্ধার করে ইকরাম সেলিমের কাছে হস্তান্তর করে। এরপর থেকে পাখি দুটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।