পল্লী বিদ্যুত সমিতির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, লালমনিরহাট ও রংপুর জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুরে।
ভারি বর্ষণ আর উজানের ঢলে নদীগুলোর পানি বেড়ে যাওয়ায় রংপুর বিভাগের প্রায় সব জেলা এখন বন্যাকবলিত। সরকারি হিসাবে সারাদেশে বন্যাপীড়িত জেলা মোট ২০টি।
কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুত সমিতির মহাব্যবস্থাপক আলী হোসেন মঙ্গলবার বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার সমিতির মধ্যে কুড়িগ্রামের সদর, চিলমারি, ফুলবাড়ি, নাগেশ্বরী উপজেলার গ্রামগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।
“গত কয়েকদিনে আমাদের সমিতির ৫২০০ কিলোমিটার বিতরণ লাইনের মধ্যে প্রায় ১৫০০ কিলোমিটার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে দুই লাখ ২৫ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।”
আলী হোসেন জানান, নষ্ট যাতে না হয় তা মাথায় রেখে যেসব জায়গা থেকে মিটার খুলে আনা সম্ভব হচ্ছে সেখান থেকে তারা মিটার খুলে আনছেন।
দিনাজপুরের পরিস্থিতিও কুড়িগ্রামের মতো বলেই জানান দিনাজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১-এর মহাব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থাকা আশরাফুল হক।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই সমিতির আড়াই লাখ গ্রাহকের মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ হাজার গ্রাহক গত তিন দিন ধরে বিদ্যুৎবিহীন রয়েছেন।”
দিনাজপুর সদর, চিরিরবন্দর, বিরল ও খানসামা উপজেলায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি বেশি নাজুক বলে জানান তিনি।
“বন্যার পানি টানতে শুরু করেছে এবং আজ (মঙ্গলবার) সারাদিন রোদ ছিল। সেই হিসাবে আগামী তিন দিনের মধ্যে পানি কমে গেলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নতি হবে।”
দিনাজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর মহাব্যবস্থাপক সন্তোষ কুমার পাল বলেন, বন্যার কারণে বিভিন্ন উপজেলায় তাদের সরবরাহ লাইন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো লাইন বন্ধ করতে হয়নি।
রংপুরে মিঠাপুকুরে বন্যার পানির চাপে সরবরাহ লাইনের একটি খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাওয়ায় শতাধিক গ্রাহক বিদ্যুতবিহীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন রংপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতি-১ এর মহাব্যবস্থাপক নুরুর রহমান।
গ্রামগুলোতে বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে পল্লী বিদ্যুৎ থাকলেও উত্তরাঞ্চলের শহরগুলোতে বিতরণের দায়িত্বে রয়েছে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি।
উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলায় এই কোম্পানির ১৩ লাখ গ্রাহক থাকলেও তাদের বিদ্যুৎ সরবরাহে এখনও বিঘ্ন হয়নি বলে জানিয়েছেন কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকিউল ইসলাম।
তবে সোমবার রাতে পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় দিনাজপুরে একটি উপ-কেন্দ্র ১২ ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়েছিল বলে জানান তিনি।