হত্যাচেষ্টা মামলার এক আসামির কারাগারে পাঠানোর আদেশ হওয়ার পর পুলিশকে বিভ্রান্ত করে ছাড়িয়ে নিয়ে আদালতের ভর্ৎসনা শুনলেন বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদার।
Published : 06 Jun 2017, 06:06 PM
শুধু তাই নয়, মঙ্গলবার হাই কোর্টে এই ঘটনার পর আদালতের নির্দেশে এজলাসে আটকে থাকতে হয়েছিল বাসেত মজুমদারকে; ক্ষমা চেয়ে সেই আসামিকে পুনরায় ফেরত এনে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পর ছাড়া পান জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী।
চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানার জালালাবাদ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুসকে ছাড়িয়ে নিতে এই কাণ্ড ঘটান ক্ষমতাসীন দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বাসেত মজুমদার।
চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানার একটি হত্যাচেষ্টার মামলার আসামি কুদ্দুস আগাম জামিনের আবেদন নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি মো. মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি এ এন এম বশির উল্লাহর বেঞ্চে এসেছিলেন।
কিন্তু আদালত সেই আবেদন নাকচ করে কুদ্দুসকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
এজলাসের বাইরে পুলিশ কুদ্দুসকে আটক করে কারাগারে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়ার সময় বাসেত মজুমদার পুলিশকে আদালতের আদেশের ভুল ব্যাখ্যা দেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
ওই আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ এ কে এম মনিরুজ্জামান কবির সাংবাদিকদের বলেন, বাসেত মজুমদার পুলিশকে ‘বিভ্রান্ত করে’ আসামিকে ছাড়িয়ে নেন এবং আদালত চত্বর ত্যাগ করতে বলেন।
বিষয়টি জানার পর সঙ্গে সঙ্গে ওই হাই কোর্ট তলব করে বাসেত মজুমদারকে। তিনি হাজির হলে আদালত প্রথমে তাকে ভর্ৎসনা করে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসামিকে পুলিশের জিম্মায় দিতে বলে।
বাসেত মজুমদার এই সময় নীরব থাকেন। তিনি শুধু বলেন, এই মামলাটি তার নয়, তার ‘জুনিয়র’ আইনজীবীর।
তখন আদালত বলে, আসামিকে পুলিশের জিম্মায় দিতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী রেজাউল করিমকে কারাগারে যেতে হবে।
বাসেত মজুমদারও আটকে থাকেন এজলাসে।
খবর শুনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন এবং সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন ওই আদালতে উপস্থিত হন।
রাজনীতিতে প্রতিপক্ষ বাসেত মজুমদারের হয়ে আদালতের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন বারের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। আসামিকে হাজির করারও প্রতিশ্রুতি দেন তারা।
“এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর আসামিকে এনে আদালত পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পর এজলাস কক্ষ থেকে বের হওয়ার অনুমতি পান বাসেত মজুমদার,” বলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কবির।
এরপর আদালত পুলিশ আসামি কুদ্দুসকে শাহবাগ থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।
চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকার ব্যবসায়ী নাজিমুদ্দিনকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় করা মামলার আসামি কুদ্দুসকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এজাহারে।
গত ১২ এপ্রিল বায়েজিদ বোস্তামী থানায় কুদ্দুসসহ ২৮ জনকে আসামি করে হত্যাচেষ্টার মামলাটি হয়।
আওয়ামী লীগ নেতা কুদ্দুস বায়েজিদ এলাকার যুবলীগকর্মী মেহেদী হাসান বাদল হত্যা মামলারও আসামি; তিনি এলাকায় কানা কুদ্দুস ও কসাই কুদ্দুস নামেও পরিচিত।