ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন দলের এক সদস্যের সঙ্গে মিলে বাংলাদেশে ‘সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র’ করার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীকে দেওয়া হাই কোর্টের জামিন বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
Published : 28 May 2017, 01:12 PM
হাই কোর্টের দেয়া জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ যে আবেদন করেছিল, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ রোববার তা খারিজ করে দিয়েছে।
আদালতে আসলাম চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
পরে মাহবুব উদ্দিন খোকন সাংবাদিকদের বলেন, আসলাম চৌধুরীর জামিন বহাল থাকায় এখন তার মুক্তিতে বাধা নেই।
ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির নেতা মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠকের একাধিক ছবি গণমাধ্যমে আসার পর গত বছরের ১৫ মে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর তার বিরুদ্ধে ২৫ মে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করে পুলিশ। এতে অবৈধভাবে সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়।
এ মামলায় তিনি হাই কোর্টে জামিন আবেদন করলে আদালত গত বছরের ৫ ডিসেম্বর রুল জারি করে। রুলে কেন তাকে নিয়মিত (স্থায়ী) জামিন দেওয়া হবে না, তা সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চাওয়া হয়।
ওই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মো. মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি এ এন এম বসির উল্লাহর হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ১৮ মে আসলাম চৌধুরীকে জামিন দেয়।
রাষ্ট্রপক্ষ হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে গেলে চেম্বার বিচারপতি বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠায়। তারই ধারাবাহিকতায় বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে।
চট্টগ্রামের এই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে নাশকতাসহ নানা অভিযোগে আরও মামলা থাকলেও সেগুলোতে জামিন হয়েছে বলে জানান তার আইনজীবীরা।
আসলামকে গ্রেপ্তারে পর রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ প্রধান একেএম শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে ‘চুক্তি করার কথা’ আসলাম পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ‘স্বীকার করেছেন’।
তিনি সে সময় বলেন, ইসরায়েলের ওই রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের ‘সম্পর্ক আছে’। আর তার সঙ্গে আসলাম চৌধুরী ‘একাধিক মিটিং’ করেছেন ভারতে।
“জিজ্ঞাসাবাদে সে যেসব তথ্য উপাত্ত দিয়েছে, তাতে স্পষ্ট প্রতিয়মান হয়েছে, সে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে সস্পৃক্ত ছিল।”
মেন্দির সঙ্গে ছবির সত্যতা স্বীকার করলেও আসলাম বলেছেন, ভারতে ‘ব্যক্তিগত’ ওই সফরে তার সঙ্গে অনেকেরই দেখা হয়। কারও সঙ্গে তার কোনো বৈঠক হয়নি। বিএনপিও এই মামলার অভিযোগটি ‘অবিশ্বাস্য’ বলে উড়িয়ে দেয়।