মৌলভীবাজার শহরের বড়হাটে জঙ্গি আস্তানা ঘিরে সোয়াটের অভিযানের মধ্যে প্রচণ্ড গোলাগুলি ও বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে।
Published : 31 Mar 2017, 01:56 PM
একজন পুলিশ সদস্যকে আহত অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে হাসপাতালে।
শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে সোয়াটের ‘অপারেশন মেক্সিমাস’ শুরু হওয়ার পর বেশ কিছু সময় থেমে থেমে গুলি চলছিল। এর মধ্যে বেলা ১১টার দিকে একটি বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায় এবং তিন তলা ওই বাড়ি থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়।
এরপর বেলা সোয়া ১২টা থেকে প্রায় আধা ঘণ্টা টানা গুলির আওয়াজ আসতে থাকে ওই বাড়ির দিক থেকে। ওই সময়ের মধ্যে তিন দফা বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটে। এর পরপরই এক পুলিশ সদস্যকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
মৌলভীবাজার থানার ওসি অখিল উদ্দিন পরে সাংবাদিকদের জানান, আহত পুলিশ সদস্যের নাম কয়সর, তিনি জেলা পুলিশের কনস্টেবল।
“সে অপারেশনে ছিল। পাশের সৈনিক গুলি করার সময় একটি খোসা ছিটকে কয়সরের গলায় লাগে এবং রক্ত বেরিয়ে আসে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
অডিও: মৌলভীবাজারের বড়হাটে মুহুর্মুহু গুলি-বিস্ফোরণের শব্দ
এই অভিযানের মধ্যেই ১১টার দিকে একবার সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, সিলেটের অভিযানের সূত্র ধরেই গত বুধবার ভোররাতে মৌলভীবাজারের দুটি জঙ্গি আস্তানা চিহ্নিত করেন তারা।
“এটি একটি জটিল অপারেশন কারণ ভেতরে একাধিক ভবন রয়েছে এবং ভবনে অনেকগুলো কামরা রয়েছে। আমাদের কাছে খবর রয়েছে, এখানে প্রচুর পরিমাণ বিস্ফোরক এবং একজন বিস্ফোরক এক্সপার্ট রয়েছে। সে কারণেই এখানে অপারেশন সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।”
তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলে, অভিযানের অগ্রগতি ঘটলে তা সাংবাদিকদের জানানো হবে।
বৃহস্পতিবার রাতে বড়হাট আবুশাহ দাখিল মাদ্রাসার গলিতে ওই বাড়ির বিভিন্ন দিকে রেকি করে অভিযানের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়। ভোর থেকে পুলিশ ও র্যাব সদস্যদেরও তৎপর দেখা যায়।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঘেরাওয়ের মধ্যে রাতে ওই বাড়ির দিক থেকে থেমে থেমে গুলির শব্দ আসে। এরপর সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে ৭টার মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ গুলি চলে।
এরপর শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে সোয়াট ও বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের সদস্যরা বড়হাটে পৌঁছান এবং প্রস্তুতি শেষে পৌনে ১০টার দিকে শুরু হয় তাদের চূড়ান্ত অভিযান।
সেই অভিযান শেষে বৃহস্পতিবার বিকালে এক ব্রিফিংয়ে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম জানান, বাড়ির ভেতরে সাত থেকে আটজনের ছিন্নভিন্ন দেহ পেয়েছেন তারা।
মনিরুলের ধারণা, নিহতরা নব্য জেএমবির সদস্য এবং তাদের মৃত্যু হয়েছে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে।