রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর হাতিয়ায় সরানো ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সদস্য মইনউদ্দীন খান বাদল।
Published : 06 Feb 2017, 11:13 PM
সোমবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে এক অনির্ধারিত আলোচনায় বাদল বলেন, “রোহিঙ্গাদের ঠেঙ্গারচরে (হাতিয়ার একটি চর) জায়গা দিলে তা আত্মহত্যার শামিল হবে। আক্রান্ত হতে পারে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব।
“রোহিঙ্গারা একবার ঠেঙ্গারচরে ঢুকে পড়লে এদের আর ফেরত পাঠানো যাবে না। মিয়ানমার বলবে, আপনাদের লোক আপনারা নিয়ে গেছেন।”
মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়নের শিকার হয়ে কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের কক্সবাজারে বসবাস করে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ‘মানবিক কারণে’ নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপে সরানোর কথা গত ১ ফেব্রুয়ারি জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
‘বাস্তবতা বিবেচনায়’ নীতিগত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে মন্তব্য করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের আগে হাতিয়ায় রোহিঙ্গারা আরও ভালোভাবে থাকতে পারবেন।
হাতিয়ায় রোহিঙ্গাদের পুর্নবাসনের বিষয়টি প্রচার মাধ্যমে জানার কথা উল্লেখ করে সংসদে বাদল বলেন, “পত্রিকায় পড়েছি, বিদেশের রাষ্ট্রদূতদের জানানো হয়েছে- রোহিঙ্গাদের হাতিয়ার ঠেঙ্গারচরে পুনর্বাসন করা হবে। এ বিষয়ে তাদের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।”
শরণার্থীদের নেওয়ার বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রধামন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনার এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে জাসদের এই নেতা বলেন, “অত্যন্ত অশালীনভাবে ট্রাম্প ফোন কেটে দিয়েছেন। এক হাজার ২০০ লোক নেওয়ার ব্যাপারে ট্রাম্প কোনো চুক্তির কথা স্বীকার করেননি।
“তারা যেখানে সামান্য পরিমাণ লোকের সমস্যার সমাধান করতে পারছে না, সেখানে আমরা ৬৫ হাজার লোক কীভাবে সামাল দেব।”
এই শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ সরকার। তবে তাতে সাড়া দিচ্ছে না দেশটি।
মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিজের দেশের নাগরিক হিসেবেও মানতে নারাজ। এনিয়ে আন্তর্জাতিক চাপও উপেক্ষা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে সামরিক শাসনে থাকা দেশটি।
এ প্রসঙ্গে সংসদে মইনউদ্দীন খান বাদল বলেন, “রোহিঙ্গা বিষয়ে আমরা অনেক কূটনৈতিক অবস্থান নিয়েছি। এত কিছুর পরও যদি রোহিঙ্গারা আমাদের ঘাড়ে সওয়ার হয়, তাহলে এত কূটনৈতিক উদ্যোগের মানে কী?”