নয় মাসের ব্যবধানে রাজধানীর মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে আবারও বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে; পুড়ে গেছে কয়েকশ ঘর।
Published : 04 Dec 2016, 02:30 PM
ফায়ার সার্ভিসের ওসি এনায়েত হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বেলা আড়াইটার পর ওই বস্তিতে আগুন লাগার খবর পেয়ে তাদের ১৪টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ শুরু করে।
পৌনে দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর বেলা ৪টা ২০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার পলাশ চন্দ্র মোদক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মফিজুর রহমান মফিজ বলছেন, এ ঘটনায় পাঁচশর বেশি ঘর পুড়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; গৃহহীন হয়েছে সহস্রাধিক মানুষ।
বস্তি এলাকার একটি দোকান থেকে আগুনের উপত্তি হয় বলে স্থানীয়দের কাছে শুনেছেন তিনি।
তবে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা বা অগ্নিকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি অগ্নি নির্বাপক বাহিনী। প্রাথমিকভাবে হতাহতেরও কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জানিয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মফিজ বলেন, “সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য খাবরের ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র। সে অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে।
গুলশান লেকের দুই তীরে দেড়শ একরের বেশি জমির ওপর বিশাল এলাকা নিয়ে এই বস্তিতে কয়েক লাখ লোকের বসবাস। দুপুরে ব্র্যাক সেন্টারের উত্তর পাশে বস্তির একটি অংশে লাগার পর ধোঁয়ার কুণ্ডলি উঠতে দেখা যায় বহু দূর থেকেও।
উল্টো দিকের একটি ভবন থেকে অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও ফেইসবুকে লাইভ করেন কাজল আব্দুল্লাহ নামের একজন সোশাল অ্যাকটিভিস্ট।
বেলা সাড়ে ৩টার দিকে আগুন খানিকটা কমে এলেও পরে আবার বাড়তে দেখা যায় বলে জানান তিনি।
ঢাকার সবচেয়ে বড় এই বস্তিতে এর আগে গত ১৪ মার্চ আগুন লেগে অর্ধশত ঘর পুড়ে যায়, অন্তত দুই জন আহত হন।
ওই জমির মূল মালিক বিটিসিএল আদালতের আদেশ নিয়ে ২০১২ সালে কড়াইলে জমি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা শুরু করে। প্রথম দিনের অভিযানে শ চারেক ঘর উচ্ছেদ করা গেলেও দ্বিতীয় দিন হাজার হাজার বস্তিবাসী গুলশান-মহাখালী এলাকার সড়কে নেমে ওই এলাকা কার্যত অচল করে দেয়।
ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশান-বনানীর বুকের মধ্যে গড়ে ওঠা এই বস্তি পোশাক শ্রমিক, রিকশাচালকসহ ঢাকার নিম্ন আয়ের বহু মানুষের ঠিকানা। অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ওই বস্তি মাদকের কারবারি ও অপরাধীদের একটি বড় আখড়া হিসেবেও পরিচিত।