রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে সুন্দরবনের ক্ষতির যে আশঙ্কা ইউনেস্কো প্রকাশ করেছে, তা ভুল তথ্যের ভিত্তিতে বলে দাবি করেছেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।
Published : 11 Oct 2016, 05:11 PM
ওই সব ‘ভুল’ শুধরে দিয়ে জাতিসংঘ সংস্থাটিকে আশ্বস্ত করে ইতোমধ্যে তাদের চিঠির জবাব পাঠানো হয়েছে বলে মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন তিনি।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নুরুল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, “নৌ অধিদপ্তরসহ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের মূল্যায়ন প্রতিবেদন সম্বলিত করে রোববার ইউনেস্কোর প্রতিবেদনের জবাব পাঠানো হয়েছে।”
সুন্দরবনের কাছে কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আপত্তি জানিয়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন ও পরিবেশবাদীদের আন্দোলনের মধ্যে গত মাসে ইউনেস্কোও উদ্বেগ জানিয়ে চিঠি দেয়।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন বাংলাদেশের সুন্দরবন ইউনেস্কোর ‘বিশ্ব ঐতিহ্যের (ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ)’ অন্তর্ভুক্ত।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বেগের প্রশমন না হলে ওই তালিকা থেকে সুন্দরবনকে বাদ দেওয়ার হুমকিও বাংলাদেশ সরকারকে দেওয়া হয় বলে গণমাধ্যমে খবর আসে।
মন্ত্রী মঞ্জু বলেন, “তাদের (ইউনেস্কো) তথ্যে কিছু ভুল ছিল। আমরা সেগুলোর সংশোধন উত্তর পাঠিয়ে দিয়েছি।”
ভুলের বিষয়গুলোর বিষয়ে তিনি বলেন, “তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হলে সুন্দরবনের মাটি-পানি-বাতাসের প্রভূত ক্ষতি হবে। আমরা বলেছি, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অবস্থান হবে সুন্দরবন থেকে ৬৭ কিলোমিটার দূরে। সুতরাং সুন্দরবনের পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।”
ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বাগেরহাটের রামপালে যে স্থানে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি হচ্ছে, তা সুন্দরবনের প্রান্তসীমার চেয়ে ১৪ কিলোমিটার দূরে এবং বনের বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ থেকে ৬৭ কিলোমিটার দূরে।
ইউনেস্কো আশঙ্কা প্রকাশ করছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা পোড়ানোর কারণে সালফার ডাই অক্সাইড, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং নাইট্রাস অক্সাইড নির্গত হয়ে অ্যাসিড বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, “আমরা বলেছি যে কয়লা প্রকল্পে ব্যবহার করা হবে, তা অত্যন্ত উন্নত মানের। একারণে এসব গ্যাস নির্গত হওয়ার পরিমাণ খুবই কম হবে। তারপরও যতটুকু হবে, তা যেন বাতাসে না মেশে, সেটা নিশ্চিত করার মতো প্রযুক্তি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহার করা হবে।
“এছাড়া ফ্লাই অ্যাশের বিষয়ে আমরা বলেছি, এটা বাতাসে যাবে না, বিশেষ পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হবে।”
সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রতিবেশের সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে রামপালে অত্যাধুনিক আলট্রা সুপার ক্রিটিকাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।
মঞ্জু বলেন, “আমরা জানিয়েছি- সুন্দরবন আমাদের জাতীয় সম্পদ, জনগণের সম্পদ। এমন কোনো প্রকল্প কখনোই গ্রহণ করা হবে না, যাতে সুন্দরবনের কোনো রকম ক্ষতি হয়।”