রোববার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর জনপ্রিয় ওই শপিং মলের লেভেল সিক্সের সি ব্লকের একটি জুতার দোকান থেকে লাগা আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের দোকানে।
প্রাথমিকভাবে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুনের ছড়িয়ে পড়া ঠেকিয়ে দিলেও ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের ভেতরের সামগ্রী ধিকি ধিকি জ্বলছিল।
আগুন লাগার কারণে ওই শপিং মলের ষষ্ঠ তলায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাসহ পুরো ভবনই কার্যত রয়েছে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণে।
১০ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর সোমবার প্রতিটি দোকানের শাটার ভেঙে ‘সুপ্ত আগুন’ নেভানোর কাজ (ডাম্পিং) করা হয়।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা পলাশ চন্দ্র মোদক মঙ্গলবার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখন আর আগুন নেই। ডাম্পিংয়ের কাজও শেষ।
ভবন হস্তান্তর করছেন না কেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এখনো আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছি। আমাদের কাছে সবকিছু ঠিকঠাক মনে হলে, কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করব।”
সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে চাইলে বসুন্ধরা সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের হেড অব মার্কেটিং এম এম জসিমউদ্দিন বলেন, “আগুন নেভানোর কাজ শেষ। আশা করছি, আজই ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে ভবনটি হস্তান্তর করবে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “এখনও মার্কেটের উপরে কেউ দুই ঘণ্টা গিয়ে থাকতে পারে না ধোঁয়ার কারণে।
“পুরো মার্কেটটি সেন্ট্রাল এসির কারণে আগুন নেভানোর পরও ধোঁয়া রয়েছে। তবে এই ধোঁয়া দৃশ্যমান নয়, কিন্তু কেউ উপরে উঠে কিছুক্ষণ থাকলে বুঝতে পারে ধোঁয়ার বিষয়টি।”
ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বসুন্ধরা সিটির এই কর্মকর্তা বলেন, “সি ব্লকের ১১টি দোকান পুরোপুরি, ২২/২৩টি দোকান আংশিক পুড়েছে। বাকিগুলো ভালো রয়েছে বলে মনে হচ্ছে।”
তবে বসুন্ধরা সিটি দোকান মালিক সমিতির সভাপতি এম এ হান্নান বলছেন, ষষ্ঠ তলার সি-ব্লকের ১০০ দোকানের প্রায় সবকটিই পুড়েছে। সেগুলোর বেশিরভাগ ব্যাগ ও জুতার দোকান।
প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির দাবি করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আজ (মঙ্গলবার) সাপ্তাহিক ছুটি। বুধবার দোকানদাররা বসে করণীয় ঠিক করবেন।”
অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানতে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস। উপ পরিচালক সুজিত রায়কে প্রধান করে গঠিত কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
“আমাদের কারও কোনো গাফিলতি ছিল কি না- দেখবে এই কমিটি,” বলেন তিনি।
রাজধানীর অন্যতম বৃহৎ এই শপিং কমপ্লেক্সে লাগোয়া দুটি ভবন রয়েছে। এর পান্থপথ সড়কমুখী মূল বিপণি বিতান আট তলা। এর ছয় তলায় রোববার ওই আগুন লাগে।
পাশের ১৯ তলায় রয়েছে বসুন্ধরার করপোরেট অফিসসহ বিভিন্ন কার্যালয়। ২০০৯ সালের ১৩ মার্চ এই ভবনের উপরের দিকে ভয়াবহ আগুনে সাত জনের মৃত্যু হয়, আহত হন শতাধিক।
এরপর ওই বছর অগাস্ট এবং ২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বসুন্ধরা সিটিতে আবারও অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
বসুন্ধরা সিটির নিজস্ব ফায়ার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জানতে চাইলে জসিম উদ্দিন বলেন, “প্রতি শিফটে ৬৫ জন দক্ষ ফায়ারকর্মী থাকে। প্রতি মাসে তাদের মহড়াও হয়।”