রাজধানীর বহুতল বিপণি বিতান বসুন্ধরা সিটিতে লাগা আগুন ১০ ঘণ্টায় নিয়ন্ত্রণে আনার কথা বললেও ২৪ ঘণ্টা পরও তা পুরোপুরি নেভাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
Published : 22 Aug 2016, 04:52 PM
সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকেও রাজধানীর জনপ্রিয় ওই শপিং মলের ষষ্ঠ তলায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ছিল ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণে। মার্কেটের সামনের চত্বরে ছিল তাদের দুটি গাড়ি।
রোববার বেলা ১১টার দিকে লেভেল সিক্সের সি ব্লকের একটি জুতার দোকান থেকে লাগা আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের দোকানে। প্রাথমিকভাবে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুনের ছড়িয়ে পড়া ঠেকিয়ে দিলেও ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের ভেতরের সামগ্রী ধিকি ধিকি জ্বলছিল।
সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে শপিং মলের সামনে এক ব্রিফিংয়ে বসুন্ধরা সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের হেড অব মার্কেটিং এম এম জসিমউদ্দিন সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন।
বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান এর আগে শপিং মল ঘুরে গেলেও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
ব্রিফিংয়ে জসিমউদ্দিন বলেন, “ফায়ার সার্ভিস এখনও আমাদের ওই ফ্লোর বুঝিয়ে দেয়নি। তারা এখনও কাজ করছেন। কাজ শেষ করে আমাদের ফ্লোর বুঝিয়ে দিলে আমাদের টেকনিক্যাল কমিটি বৈঠকে বসবে। মার্কেট কবে চালু করা যাবে সে সিদ্ধান্ত তখন নেওয়া হবে।”
বসুন্ধরা সিটি দোকান মালিক সমিতির সভাপতি এম এ হান্নানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ষষ্ঠ তলার সি-ব্লকের ১০০ দোকানের প্রায় সবগুলোই পুড়ে গেছে। সেগুলোর বেশিরভাগ মোবাইল ও জুতার দোকান।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা মো. এনায়েত হোসেন জানান, রোববার রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও সি ব্লকের দোকানগুলোতে ‘সুপ্ত আগুন’ নেভানোর কাজ (ডাম্পিং) শেষ হয়নি।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমদ খানও প্রতিটি দোকানের শাটার ভেঙে ‘সুপ্ত আগুন’ নেভানোর চেষ্টার কথা বলেন।
এই কাজ কখন শেষ হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা বলা কঠিন, কারণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১০০ দোকান।”
দোকান মালিক সমিতির দাবি, তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি টাকা। ক্ষতি বাড়ার জন্য মার্কেট কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন কামরুল হাসান নামের এক দোকানমালিক।
তিনি বলেন, “আগুন লাগার পর দোকানে তালা লাগিয়ে চলে যেতে বলা হয়েছিল। সকালে যখন এলাম তখন বলা হচ্ছে, দোকানে তালা দিয়ে যাওয়ার কারণে মালামাল রক্ষা করা যায়নি।
“যদি তালা লাগানো না থাকত- আগুন নেভানোর কাজ অনেক দ্রুত হতে পারত, মালামালও রক্ষা পেত।”
কামরুলের দাবি, তার জুতার দোকান ক্ষণিকা ফুটওয়্যারের প্রায় ১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ওই ফ্লোরের সারিন সুজের মালিক মোবারক হোসেন বলছেন, তার দোকানের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬০ লাখ টাকা।
সপ্তম তলার একটি বোরকার দোকানের মালিক লোকমান মিয়া বলেন, “পরিষ্কার করতে গিয়ে বিভিন্ন তলার অনেক মালামাল পানিতে ভিজে গেছে। আট তলা থেকে নিচতলা পর্যন্ত পানিতে সয়লাব হয়ে আছে।”
আগুনে না পুড়লেও পানির কারণে ফ্লোরে থাকা অনেক মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।