মঙ্গলবার সকালে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই রায় ঘোষণা করে। ট্রাইব্যুনালের দেওয়া সর্বোচ্চ সাজার রায় আপিলেও বহাল থাকে।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ওই কারাগারের ৪০ নম্বর কনডেম সেলে বন্দি রয়েছেন মীর কাসেম।
কারাগারের কর্মকর্তারা জানান, মীর কাসেমের কক্ষে টেলিভিশন কিংবা রেডিও না থাকায় বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত রায়ের বিষয়টি তিনি জানতে পারেননি।
কারাগার এলাকায় কেবল টিভির লাইনে সমস্যা থাকায় কারা কর্মকর্তারাও বিষয়টি জানতে পারেন টেলিফোনে অথবা সাংবাদিকদের মাধ্যমে।
প্রশান্ত কুমার বণিক বলেন, “দুপুরে মীর কাসেমও অনানুষ্ঠানিকভাবে আপিল বিভাগের রায় জেনেছেন। তার মধ্যে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।”
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৭ জুন মতিঝিলে নয়া দিগন্ত কার্যালয় থেকে কাসেমকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরের বছর ৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ট্রাইব্যুনালে শুরু হয় তার যুদ্ধাপরাধের বিচার।
২০১৪ সালের ২ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত এই যুদ্ধাপরাধী ফাঁসির রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়িয়ে বলে উঠেছিলেন “শয়তান.. শয়তান..।
“মিথ্যা ঘটনা... মিথ্যা সাক্ষ্য... কালো আইন... ফরমায়েশি রায়। সত্যের বিজয় হবে শীঘ্রই... শীঘ্রই।”
ওই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করলেও চূড়ান্ত রায়ে সর্বোচ্চ সাজাই বহাল থাকে।
মীর কাসেমের ফাঁসির রায় এসেছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রামে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন আহমেদসহ কয়েকজনকে হত্যার দায়ে। আরও ছয় অভিযোগে হয়েছে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য ও দলটির ‘অর্থ যোগানদাতা’ মীর কাসেম এখন কেবল ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে পারবেন। তা নাকচ হয়ে গেলে এবং রাষ্ট্রপতির প্রাণভিক্ষা না পেলে তাকে ফাঁসিকাষ্ঠেই যেতে হবে।
জেল সুপার জানান, ২০১২ সাল থেকে মীর কাসেম কাশিমপুরে রয়েছেন। ট্রাইব্যুনালের রায়ের আগ পর্যন্ত তিনি ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দির মর্যাদায় ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর তাকে ফাঁসির আসামিদের সেলে পাঠানো হয়।
আদালতের রায়ের কাগজ হাতে পেলে তা আনুষ্ঠানিকভাবে আসামি মীর কাসেমকে শোনানো হবে বলে জানান তিনি।