ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে মেট্রোরেলের পথ তৈরির পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
Published : 20 Jan 2016, 12:21 PM
মেট্রো রেলের পক্ষে-বিপক্ষে ঢাবি উপাচার্যকে স্মারকলিপি
মেট্রোরেলের পথ বদলের সুযোগ নেই: কাদের
মেট্রোরেলের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘চৈতালী’, ‘বৈশাখী’, ‘ক্ষণিকা’ ও ‘শ্রাবণ’ বাস ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীরা বুধবার সকাল ১০টায় টিএসসির সামনের সড়কদ্বীপ রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নেন।
এক ঘণ্টা পর সেখান থেকে কয়েকগজ দূরে ‘স্বোপার্জিত স্বাধীনতা’ চত্বরের সামনে ‘সাধারণ ছাত্রছাত্রী’ ব্যানারে রাস্তায় দাঁড়ান মেট্রোরেলের বিপক্ষের দেড়শতাধিক শিক্ষার্থী।
রাজু ভাস্কর্যের সামনে প্রায় চারশ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের মধ্যে দিয়ে মেট্রোরেল চালুর পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান নেন। সেখানে বক্তব্য দেওয়ার পাশাপাশি চলে ‘স্ট্রিট পেইন্টিং’।
বৈশাখী বাসের কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি আতিক নেওয়াজ বলেন, “প্রতিদিন যানজটের কারণে আমরা যারা বাইরে থেকে আসি, তাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। প্রতিদিন দুই থেকে তিন ঘণ্টা অপচয় হয়। আমরা চাই মেট্রোরেল হোক।”
অন্যদিকে ক্যাম্পাসে মেট্রোরেলের পথ তৈরির বিরোধিতায় গড়ে ওঠা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক তাঈশা তাশরিন বলেন, “আমরা মেট্রোরেলের বিরোধিতা করছি না। আমরা মেট্রোরেল চাই, তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে দিয়ে নয়।
“এর রুট পরিবর্তন করতে হবে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাব।”
ঢাকার বহুল প্রতিক্ষীত মেট্রোরেল প্রকল্প নির্ধারিত সময় ২০১৯ সালে বাস্তবায়িত হলে রাস্তার মাঝ বরাবর উপর দিয়ে মোট ২৪ জোড়া ট্রেন চলাচল করবে। উত্তরা থেকে শুরু হয়ে মিরপুর-ফার্মগেইট হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত যাবে এই ট্রেন, সময় লাগবে ৪০ মিনিটেরও কম।
রাজধানীতে মেট্রোরেল রুট নির্মাণে ইতোমধ্যে অ্যালাইনমেন্ট ও ১৬টি স্টেশনের নকশা চূড়ান্ত হয়েছে। শেষ হয়েছে প্রকল্প এলাকার বিভিন্ন স্থানে চালানো ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ। ডিটেইল ডিজাইনের কাজ শেষে হবে ২০১৬ সালের অগাস্টে।
মেট্রোরেলের ১৬টি স্টেশন হবে- উত্তরা (উত্তর), উত্তরা (সেন্টার), উত্তরা (দক্ষিণ), পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেইট, সোনারগাঁও, জাতীয় জাদুঘর, দোয়েল চত্বর, জাতীয় স্টেডিয়াম এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এলাকায়।
ট্রেনের শব্দে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থগার ও দোয়েল চত্বরের পাশে অবস্থিত বিজ্ঞান লাইব্রেরিতে লেখাপড়া ব্যাহত হবে বলেও দাবি তাদের।
অবশ্য প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পথের দুই পাশেই বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থাকবে বিধায় মেট্রোরেল চলাচলে কম্পন এবং শব্দ দূষণ প্রতিরোধেও থাকবে বিশেষ প্রযুক্তি।
নিজেদের দাবির পক্ষে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপার্যকে স্মারকলিপিও দিয়েছে।
অন্যদিকে মেট্রোরেলের রুট পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
এ অবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভেতর দিয়ে মেট্রোরেলের রুট নির্মাণের সময় প্রত্নতাত্ত্বিক ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট গবেষকরা।