মঙ্গলবার সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর বেতন কাঠামো নিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সবার কাছে আমরা বারবার একটা বার্তাই দেওয়ার চেষ্টা করেছি, শিক্ষকদের বেতন-ভাতার জন্য আমরা আন্দোলন করছি না। আমাদের শিক্ষকদের মর্যাদা যাতে কোনোভাবেই অবনমিত না হয়।”
অষ্টম বেতন কাঠামোতে ‘সিলেকশনগ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপক’ পদটি বিলুপ্ত করে সিলেকশনগ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের সচিবদের সমান গ্রেড-১ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে জ্যেষ্ঠ সচিবদের জন্য নতুন একটি বিশেষ গ্রেড তৈরি করা হয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলছেন, আমলারা নিজেদের জন্য বিশেষ গ্রেড তৈরি করলেও শিক্ষকদের সিলেকশনগ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপক পদটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। ফলে অধ্যাপকরা আমলাদের নিচের স্কেলে থাকছেন।
এর প্রতিবাদে গত তিন মাস ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
“শিক্ষকরা মর্যাদার জন্যে অনেক কিছু ছেড়ে এখানে এসেছে। সেই মর্যাদায় যেন আঘাত করা না হয়, বারবার আঘাত করা না হয়, আঘাত করলে শিক্ষকরা সেটা সহজভাবে নিচ্ছে না। ইতিমধ্যেই আমরা অনেকভাবে অপমানিত, ঘৃণিত, লাঞ্ছিত। ভবিষ্যতে যেন এই রকম অবস্থার সৃষ্টি না হয়।”
বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আলোচনায় উনি (শিক্ষামন্ত্রী) আন্তরিকভাবেই আমাদের বিষয়গুলো শোনেন। আমরা আশা করি, একটা সমাধানে পৌঁছাতে পারব।”
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেওয়া দেশের জন্য ‘ভালো’ বলেও দাবি করেছেন অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন।
শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অনেক অপপ্রচার হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “বৈঠকে ওই জিনিসগুলো তুলে ধরেছি। যেমন, শিক্ষকরা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াচ্ছে, গবেষণা, কনসালটেন্সি ইত্যাদি এসব।
“আমরা বলেছি, শতকরা ৪ বা ৩ জন হয়তো পড়াতে পারে। তা আমাদের দেশের জন্য, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভালো, ছেলে-মেয়েদের জন্য ভালো। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মের মধ্য থেকেই এটা হচ্ছে। এখানে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, কনসালটেন্সি-এইটা ওইটা।
“এগুলো আমরা স্যারকে (শিক্ষামন্ত্রী) বলেছি, যেহেতু স্যার আমাদের মন্ত্রী। এই জিনিসগুলো যদি বিভিন্ন ফোরামে এবং যেখানে যেখানে কনসার্ন যারা আছেন, যে বডি-এগুলোতে তুলে ধরলে আমার মনে হয়, ভুল বোঝাবুঝিগুলো থাকবে না। কারণ এই সব ভুল বোঝাবুঝিগুলোর কারণে এই অপপ্রচার হচ্ছে। শিক্ষকদের বিভিন্নভাবে সম্মানহানি হচ্ছে।”
আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ১ নভেম্বর থেকে লাগাতার কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা।