ঢাকার গুলশানে ইতালীয় নাগরিক চেজারে তাভেল্লা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আইএসের সম্পৃক্ততার ‘প্রমাণ পাওয়া যায়নি’ বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
Published : 30 Sep 2015, 04:54 PM
বুধবার দুপুরে ঢাকায় ইতালির রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, এটা আইএসের কর্ম নয়। ইতালিও এ ঘটনায় আইএসের সম্পৃক্ততার কোনো আলামত দেখছে না।”
সোমবার সন্ধ্যায় কূটনীতিক পাড়া গুলশানে তাভেল্লাকে গুলি চালিয়ে হত্যার কয়েক ঘণ্টা পর আইএস ঘটনার দায় স্বীকার করেছে বলে জানায় জঙ্গি হুমকি পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট ‘সাইট ইন্টিলিজেন্স গ্রুপ’।
জঙ্গি হামলার হুমকির কথা জানিয়ে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল তাদের বাংলাদেশ সফর পিছিয়ে দেওয়ার দুই দিনের মাথায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। এরপর অস্ট্রেলিয়ার মত যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশে তাদের নাগরিকদের চলাফেরায় সতর্কতা জারি করে।
এ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই ইতালির রাষ্ট্রদূত মারিয়ো পালমা বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণায়ে যান।
বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইটালির রাষ্ট্রদূত ওই হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের ‘প্রশংসা করেছেন’।
মন্ত্রী বলেন, “উনি যেহেতু এনজিওতে চাকরি করতেন সেখানে পেশাগত কোনো বিরোধ আছে কিনা বা অন্য কোনো বিরোধ আছে কিনা এটা তারাও খতিয়ে দেখছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। আমরা সব দিক বিবেচনা করে অগ্রসর হচ্ছি।”
চেজারে তাভেল্লা আইসিসিও কো-অপারেশন নামে একটি সংস্থার খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মসূচির প্রকল্প ব্যবস্থাপক ছিলেন।
কামাল বলেন, “ইতিলীয় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমাদের খোলামেলা আলাপ হয়েছে। অনেকগুলো সন্দেহ উনারা আমাদের জানিছেন, আমরাও বলেছি। আমাদের কথার সঙ্গে তিনি একমত ছিলেন।”
ইতালিও বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “আইএসের সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে তারাও জানিয়েছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও আইএসের সম্পৃক্ততা খুঁজে পায়নি।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে ইতালির কয়েকজন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
“আমরা তাদের বলেছি, এদেশে আইএসের অস্তিত্ব নেই। এদেশের মানুষ ধর্মভীরু, তবে ধর্মান্ধ নয়।”
তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “ওই এলাকার কিছু ভিডিও ফুটেজ আমরা সংগ্রহ করেছি। তবে ভিডিও ফুটেজগুলো স্পষ্ট নয়। ঘটনার সময় সন্ধ্যা সোয়া ৬টা থেকে সাড়ে ৬টা। ওই সময় আলো আঁধারির খেলা থাকে। সিটি করপোরেশনের সবগুলো বাতি তখনও সক্রিয় ছিল না।”
কয়েকটি দেশের দূতাবাস বাংলাদেশে তাদের নাগরিকদের জন্য যে সতর্কতা জারি করেছে, তা ‘দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, “দূতাবাসে রেড অ্যালার্ট জারি আমাদের কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ধরনের কেনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।”
তারপরও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তার প্রতি ‘বিশেষ নজর’ দিতে সব জেলার পুলিশ সুপার, ডিআইজি ও পুলিশ কমিশনারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।