উনিশটি হাঁড়ি চুরির অভিযোগে শেরপুরের শ্রীবরদীতে আলম নামে ২১ বছরের যুবককে সালিশ শেষে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
Published : 31 Aug 2015, 08:27 PM
‘নির্যাতনে মৃত্যু’ হলেও ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতে লাশ রাস্তায় ফেলে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টার অভিযোগও করছে নিহতের পরিবার।
সোমবার বিকেলে শ্রীবরদী থানার ওসি এস আলম বলেন, “আদালতে দায়ের করা এজাহার হাতে এসে পৌঁছেছে। আালতের নির্দেশনা অনুয়ায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
গত ১৪ অগাস্টে ওই যুবকের লাশ উদ্ধার হয়। ২৩ অগাস্ট হত্যার অভিযোগে আদালতে করা নিহতের বাবা বাচ্চু মিয়ার মামলায় শ্রীবরদী উপজেলার রাণী শিমুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুসামা কবির ও মেম্বার মিল্লাত হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নিহতের বাবা বাচ্চু মিয়া ও অন্যরা জানান, গত ১৪ অগাস্ট ঝিনাইগাতী উপজেলার বিষ্ণপুর গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে আলম শ্রীবরদী উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের ভায়াডাঙ্গা দক্ষিণ পাড়ায় তার নানা রাজা মিয়ার বাড়িতে বেড়াতে যায়।
সেখান থেকে ফেরার পথে হাঁড়ি-পাতিল চুরির অভিযোগ তুলে এলাকার কয়েকজন তাকে আটক করে।
পরে ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গ্রাম্য সালিশ বসে। ইউপি চেয়ারম্যান আবুসামা কবির পাতিল চুরির অপরাধে আলমকে দোষী সাব্যস্ত করে তার ওপর নিজেই বেত্রাঘাত করেন।
ওই দিনই আলমকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করার কথা বলে তার লোকজন দিয়ে ধরে নিয়ে যান।
পরদিন ভোরে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার হোসেনপুর গ্রামে ঢাকা-শেরপুর মহাসড়ক থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার করে ফুলপুর থানা পুলিশ। পরে ময়না তদন্তের জন্যে লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ সংবাদ পেয়ে নিহতের স্বজনরা ফুলপুর পুলিশের কাছ থেকে তার লাশ গ্রহণ করেন এবং হত্যার অভিযোগ এনে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
তবে হত্যাকাণ্ডের কথা অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান আবুসামা কবির বলেন, “সাতটি বাড়ি থেকে উনিশটি হাঁড়ি চুরির দায়ে আটক করে আমার কাছে সালিশের জন্য আনে।
“তখন জনরোষ থেকে আলমকে বাঁচাতে লাঠি দিয়ে কয়েকটি ঘা দিয়ে স্বজনদের কাছে তাকে দিয়ে দেওয়া হয়।”
তার পিটুনিতে আলম মারা যায়নি দাবি করে পরদিন ভোরে ময়মনসিংহে সড়ক দুঘর্টনায় আলমের মৃত্যু হয় বলেন আবুসামা।
এদিকে, এই নির্যাতনের ভিডিওচিত্র এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।