রাজধানীর র্যাডিসন হোটেলে শনিবার এই গোলটেবিলে আলোচক ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, বিটিআরসি মহাপরিচালক (সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগ) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. এমদাদ উল বারী, কম্পিউটার বিজ্ঞানের শিক্ষক ও গবেষক ড. নোভা আহমেদ এবং জাতিসংঘ শিশু তহবিলের বিভাগীয় প্রধান (যোগাযোগ, প্রচার ও প্রচারণা) সীমা ইসলাম।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর সঞ্চালনায় রেডিসন হোটেলের এই গোলটেবিলে সমাজের নানা স্তরের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীও অংশ নেন।
আলোচনার শুরুতে তৌফিক খালিদী সাইবার জগতে বাংলাদেশিদের বিচরণের তথ্য তুলে ধরে বলেন, নিরাপদ ইন্টারনেট এখন সবচেয়ে জরুরি জাতীয় বিষয়গুলোর একটি।
বেশ কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরে ইন্টারনেটে তথ্য, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, সুরক্ষা, প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা, সমাজের সার্বিক নিরাপত্তা বিষয়ের উপর জোর দেন বাংলাদেশের প্রথম ইন্টারনেট সংবাদপত্রের এই সম্পাদক।
“আমরা যারা সততার সঙ্গে নির্ভরযোগ্য তথ্য বিপণনের ব্যবসা করি; তারাও সুরক্ষিত নয়। সংবাদ পরিবেশনের নামে নানা সামাজিক মাধ্যম ও নানা সামাজিক মাধ্যমে বিব্রতকর, ক্ষতিকর মন্তব্য ছুড়ে দেওয়া হচ্ছে। ঠেকানোর কেউ নেই।”
ইন্টারনেটে তথ্য চুরির মাধ্যমে বাজারে প্রতিযোগিতার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তৌফিক খালিদী।
“আমাদের পরিশ্রমলব্ধ কন্টেন্ট চুরি করে টাকা বানাচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠান। আমাদের সুনাম ক্ষুণ্ন করে এমন সব কন্টেন্ট তোলা হচ্ছে, যেগুলো আমাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য মানহানিকর। নকল ও চুরি করে ব্যবহার করা হচ্ছে আমাদের কন্টেন্ট।”
গোলটেবিল আলোচনার শুরুতে একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়, যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারের বিরূপ অভিজ্ঞতার কথাও উঠে আসে।
বাংলাদেশে ইন্টারনেটের পথচলায় দেড় যুগে যুক্ত হয়েছেন অন্তত ৪ কোটি ৮০ লাখ মানুষ, যা পৃথিবীর স্বাধীন ১৭১টি দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়ে বেশি।
এই সংখ্যা বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৩১ ভাগ। বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহাকারীর ৯৭ ভাগ এই সেবা নেন মোবাইল থেকে।
বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ৬৯ ভাগ সোশ্যাল মিডিয়ার গ্রাহক। পেশাগত কাজে ইন্টারনেটে ঢোকেন ৬২ ভাগ, রাজনৈতিক খবর পড়তে ঢোকেন ৫৬ ভাগ, স্বাস্থ্য তথ্য পেতে ২৮ ভাগ এবং সরকারি তথ্য পেতে ব্যবহার করেন ২৬ ভাগ।
কিন্তু এই ব্যবহারকারীদের অনেকেই ইন্টারনেটে নিজেদের সুরক্ষিত করার উপায় স্পষ্টভাবে জানেন না বলে তথ্য চিত্রে উঠে আসে।
নেতিবাচক ব্যবহার পরিহার করি: মাশরাফি
‘নিরাপদ ইন্টারনেট’ শিরোনামের এই গোলটেবিলে জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার একটি ভিডিও বার্তা পরিবেশিত হয়, যাতে তিনি তথ্য প্রযুক্তির নেতিবাচক ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন।
সতীর্থ খেলোয়াড় নাসির হোসেনের একটি বাজে অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে মাশরাফি বলেন, ইন্টারনেট এখন বাংলাদেশে খুবই জনপ্রিয়। এর যেমন ভালো দিক রয়েছে, তেমনি খারাপ দিকও রয়েছে।
“আমরা যেন ইন্টারনেটের খারাপ ব্যবহার না করি। খারাপ দিক আমরা এভয়েড করতে পারি।”
গোলটেবিল আলোচনায় প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য ফেইসবুকে নানা ধরনের বিব্রতকর ও মানহানিকর পোস্টের বিষয়টি তুলে ধরেন।